আমরা সবাই চাই যত বয়সই হোক, মস্তিষ্ক যেন থাকে সজাগ, স্মৃতি পরিষ্কার আর মন যেন থাকে হালকা। কিন্তু সত্যি কথা হলো, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতি দুর্বল হয়ে যাওয়া বা মন খারাপ হয়ে যাওয়া খুবই সাধারণ। তবে আশার কথা হলো, কিছু সহজ অভ্যাস থাকলে মস্তিষ্ককে অনেকটাই তরতাজা রাখা সম্ভব।
আরও পড়ুন : মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ রাখতে সাহায্য করতে পারে এমন ১১ অভ্যাস জেনে নিন
আরও পড়ুন : সারাক্ষণ চার্জার প্লাগে রাখেন? জেনে নিন কী হতে পারে
সিএনবিসির এক সাক্ষাৎকারে নিউরোসায়েন্টিস্ট ও নিউরোলজিস্টদের মতে, এই ৪টি অভ্যাস নিয়মিত মেনে চললে আপনার মস্তিষ্ক থাকবে সুস্থ, সক্রিয় আর স্মৃতিশক্তি থাকবে টনটনে।
১. রোজ হাঁটুন
হ্যাঁ, শুধু হাঁটলেই মস্তিষ্ক ভালো থাকে! নিউরোসায়েন্টিস্ট ডা. ওয়েন্ডি সিজুকির মতে, প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিট হাঁটলেই মস্তিষ্কে এমন সব কেমিক্যাল (যেমন : ডোপামিন, সেরোটোনিন) তৈরি হয়, যেগুলো মন ভালো করে, টেনশন কমায়।
আর সবচেয়ে বড় কথা, এটা নিয়ম করে করলে দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
২. বিরক্তি দূর করুন, নতুন কিছু শিখুন
বোর লাগছে? এটিই মস্তিষ্কের জন্য সবচেয়ে খারাপ! তাই চ্যালেঞ্জ নিন, নতুন কিছু শিখুন।
যেমন:
- নতুন ভাষা শেখা
- নতুন বই পড়া
- নতুন কারও সঙ্গে আলাপ
- স্মৃতি বাড়ানোর গেম খেলা
- নতুন জায়গা ঘোরা
মস্তিষ্ককে চ্যালেঞ্জ দিলে তা আরও সক্রিয় হয়। এমনকি ৮০ বছর বয়সেও মানুষ বই লিখছে শুধু এই অভ্যাসের কারণে!
৩. মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন
বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো—এসব শুধু ভালো লাগার জন্য নয়, মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকলে মন ভালো থাকে, স্ট্রেস কমে, আর তা সরাসরি প্রভাব ফেলে আপনার মস্তিষ্কে।
৪. আবেগ নিয়ন্ত্রণে আনুন
রেগে যাচ্ছেন? দুশ্চিন্তায় মাথা ঘুরছে? এগুলো মস্তিষ্কের ওপর চাপ ফেলে। তাই শিখে ফেলুন কীভাবে আবেগ সামলাতে হয়।
ডা. সিজুকির পরামর্শ
- এমন কোনো সুখের স্মৃতি মনে করুন, যেটা আপনাকে খুশি করে
- সেই অনুভূতিটা আবার জাগিয়ে তুলুন
এভাবে আপনি মস্তিষ্ককে শেখাতে পারবেন কীভাবে চাপ সামলে হাসিখুশি থাকা যায়।
নিজের মস্তিষ্কের ‘হেলথ স্কোর’ চেক করুন
একটা ছোট প্রশ্নমালা—ব্রেন কেয়ার স্কোর—যেটা দিয়ে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার মস্তিষ্ক কতটা সুস্থ। প্রশ্নগুলো থাকে:
- আপনি সামাজিকভাবে কেমন সক্রিয়?
- খাওয়াদাওয়া কেমন?
- ঘুম কেমন হয়?
- ধূমপান করেন কি?
- মানসিক চাপ কতটা আছে?
কম স্কোর? চিন্তার কিছু নেই। ওই দিকগুলোয় মনোযোগ দিলে স্কোর বাড়বে, মানে মস্তিষ্কও থাকবে ভালো। মস্তিষ্কের যত্ন নিতে কোনও ডাক্তারি ডিগ্রি লাগে না।
আরও পড়ুন : ইনডোর গার্ডেনিং শুরু করতে বেছে নিন এই ৭ গাছ
আরও পড়ুন : ন্যাড়া হলে কি চুল ঘন হয়, জানুন গবেষণা কী বলছে
হাঁটুন, কিছু নতুন শিখুন, মানুষের সঙ্গে সময় কাটান, আবেগকে সামলাতে শিখুন আর মাঝে মাঝে দেখে নিন, আপনার মস্তিষ্ক ঠিকঠাক আছে তো?
এই ৫টা ছোট অভ্যাসই হতে পারে আপনার বুদ্ধিদীপ্ত ভবিষ্যতের চাবিকাঠি। বয়স বাড়লেও মস্তিষ্ক থাকবে টগবগে!