অনেকেই বলেন বয়সের চিন্তা না করে জীবনকে উপভোগ করো, মনে তারুণ্য ধরে রাখতে পারলে বয়স কোনো ব্যাপার না। বয়স বাড়ার ত্বক নান ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। ৩০-এর পর থেকেই নিতে হবে ত্বকের বিশেষ যত্ন।
জীবনকে যদি কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করা হয় তাহলে ৩০ বছর বয়সকে বলা যায় জীবনের চূড়া। এ সময় থেকে ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন কমতে থাকে। ত্বকের শুষ্কতা, বলিরেখাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাই ৩০ এর থেকে পরের সময়গুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় অবহেলা না করে সচেতন হতে হবে।
জেনে নেওয়া যাক এই সময়ে থেকে ত্বকের কী কী যত্ন করবেন-
ত্বকের ডাবল ক্লিনজিং করা
ডাবল ক্লিনজিংয়ের মানে হলো মুখ দুইবার পরিষ্কার করা। প্রতিদিনের ফেসওয়াশ বা সোপ ব্যবহার করলেই হবে। খেয়াল রাখতে হবে, মুখের এবং গলার প্রতিটি অংশই যেন ভালোমতো পরিষ্কার হয়। ক্লিনজিংয়ের পরে দুই মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া মেকআপ করা থাকলে প্রথমে অয়েল বেসড ক্লিনজারের সাহায্যে মুখ পরিষ্কার করে তারপর ভালো করে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
নিয়মিত স্ক্রাব ব্যবহার করা
মৃত কোষ সরিয়ে নিতে নিয়মিত প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে স্কাবিং করে নিতে পারেন। চিনি, লেবু বা মধু দিয়ে সেরে নিতে পারেন ঘরোয়া উপায়ে স্ক্রাবিং।
ময়েশ্চারাইজিং করা
ত্বক টানটান এবং মসৃণ রাখতে ময়েশ্চারাইজার অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। তাই রূপচর্চার রুটিন থেকে ময়েশ্চারাইজিংয়ের প্রতি বাড়তি নজর দিতে হবে।
মাসে একবার ফেসিয়াল করা
নিয়মিত ফেসিয়াল ত্বককে আর্দ্র রাখে। এছাড়া ম্যাসাজের ফলে ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। তাই প্রতি মাসে অন্তত একবার হলেও অভিজ্ঞ কারো হাতে ফেসিয়াল করে নেওয়া উচিত।
সিরামের ব্যবহার
৩০ বছরে পর স্কিনকেয়ারে সিরাম রাখুন। এটি ত্বককে এক্সফোলিয়েট করবে। ত্বকের ভেতরে কোলাজেনের উৎপাদন বাড়াবে। টোনার লাগানোর পরে ত্বকে রেটিনল সিরাম ব্যবহার করতে পারেন। দিনে যদি নাও করা হয় রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই সিরাম ব্যবহার করতে পারেন।
ব্যায়াম
নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে যায়। তাই ত্বকের লাবণ্যও বাড়ে। প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা ব্যায়াম করুন। সেটা জিমে গিয়ে হোক বা ফ্রি হ্যান্ড। যোগব্যায়ামও করতে পারেন।
সানস্ক্রিনের ব্যবহার
রোদে বাইরে বের হলে ত্বকে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবেন না। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে বাধা দেয়। তাই ত্বককে টান টান ও সুন্দর রাখতে এসপিএফ ৫০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করতেই হবে।
প্রসাধনী পরিবর্তন
৩০ এর পরে একটু বেছে ভালো প্রসাধনীই কিনুন। এমন প্রসাধনী ব্যবহার করুন যা আপনার ত্বকের আর্দ্রতা বাড়াতে সাহায্য করবে। ত্বকের উপযোগী সেরাটিই কিনতে চেষ্টা করুন। যাতে ত্বকের কমনীয়তা বজায় থাকে। এছাড়া ত্বক যাতে অতিরিক্ত শুষ্ক না হয়ে ওঠে তাই ক্ষার একেবারেই নেই বা কম ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করুন।
গুয়াশার ব্যবহার
একটু ফেস অয়েল বা সিরাম নিয়ে খুব হালকা চাপ দিয়ে ম্যাসাজ করুন। সবসময় ওপরের দিকে এবং বাইরে দিকে স্ট্রোক দিন। এই ছোট ত্বকের রুটিনটি আপনার ত্বককে করবে সতেজ ও টানটান।
নিয়মিত ঘরোয়া প্যাক
ত্বকের যত্নে ফেস প্যাক বেশ কার্যকর। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও প্যাকের গুরুত্ব অনেক। তাই প্রতিদিন ত্বকের যত্নে ঘরোয়া প্যাক বানিয়ে মুখে ব্যবহার করতে পারেন। ঘরোয়া প্যাক বানাতে ১টি মাঝারি আকারের পাকা সাগর কলার খোসা, ১টি ভিটামিন-ই ক্যাপসুল, ১ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া, ১টি টমেটো নিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। এবার প্যাকটি মুখে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর পানি ফেলুন। এতে ত্বক হবে উজ্জ্বল। এছাড়া ১ টেবিল চামচ টক দইয়ের সঙ্গে ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া, আধা চা চামচ মধু, আধা চা চামচ বাদাম তেল (না থাকলে জলপাই তেল) মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক হবে মসৃণ।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
এসএকেওয়াই/কেএসকে/জেআইএম