ভাগাড়ের পাশে জরাজীর্ণ ভবনে চলে ময়নাতদন্ত
চাঁদপুরের ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মাণ হয়নি স্থায়ী ও আধুনিক মর্গ ভবন। দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থায় পড়ে থাকা প্রকল্পের কারণে বাধ্য হয়ে শহরের বাইরে অবস্থিত জরাজীর্ণ অস্থায়ী স্থাপনায় ময়নাতদন্ত চালাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে জনস্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও আইনগত প্রক্রিয়া মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, বহু আগে নতুন মর্গ ভবন নির্মাণের কাজ শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাজেট সংকট, পরিকল্পনা পরিবর্তন ও ভূমি জটিলতার কারণে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেছে। তবুও কাজ শুরু হয়নি। ফলে শহর থেকে বেশ দূরে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হরিজন কলোনির পাশে ভাগাড় ও শুকুরের খামারের পাশে অস্থায়ী মর্গে ময়নাতদন্ত চলছে। অস্থায়ী এ মর্গে নেই আধুনিক লাশ কাটার যন্ত্রপাতি। নেই উপযুক্ত ফ্রিজিং সিস্টেম। ভবনের ভিতরে দেওয়াল ফাটল, ছাদের ঝুঁকি ও স্থায়ী দুর্গন্ধে স্বজনদের পক্ষে সেখানে অবস্থান করাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এ পরিবেশে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। শহরের বাসিন্দা রিয়াদ ফেরদৌস ও আশিক বিন রহিম জানান, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালটি জনবহুল হাসপাতাল
চাঁদপুরের ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মাণ হয়নি স্থায়ী ও আধুনিক মর্গ ভবন। দীর্ঘদিন ধরে অচলাবস্থায় পড়ে থাকা প্রকল্পের কারণে বাধ্য হয়ে শহরের বাইরে অবস্থিত জরাজীর্ণ অস্থায়ী স্থাপনায় ময়নাতদন্ত চালাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে জনস্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও আইনগত প্রক্রিয়া মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বহু আগে নতুন মর্গ ভবন নির্মাণের কাজ শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাজেট সংকট, পরিকল্পনা পরিবর্তন ও ভূমি জটিলতার কারণে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেছে। তবুও কাজ শুরু হয়নি। ফলে শহর থেকে বেশ দূরে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হরিজন কলোনির পাশে ভাগাড় ও শুকুরের খামারের পাশে অস্থায়ী মর্গে ময়নাতদন্ত চলছে।
অস্থায়ী এ মর্গে নেই আধুনিক লাশ কাটার যন্ত্রপাতি। নেই উপযুক্ত ফ্রিজিং সিস্টেম। ভবনের ভিতরে দেওয়াল ফাটল, ছাদের ঝুঁকি ও স্থায়ী দুর্গন্ধে স্বজনদের পক্ষে সেখানে অবস্থান করাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এ পরিবেশে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শহরের বাসিন্দা রিয়াদ ফেরদৌস ও আশিক বিন রহিম জানান, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালটি জনবহুল হাসপাতাল কিন্তু এখনো কোনো স্থায়ী মর্গ নির্মাণ হয়নি। শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে একটি অস্থায়ী মর্গ রয়েছে। তবে সেই মর্গের চারপাশে আবর্জনার স্তূপ, শুকুরের খামার। এমন পরিবেশে ময়নাতদন্ত হওয়া অত্যন্ত লজ্জাজনক। স্বজনরা ঠিকমতো শেষবার মৃতদেহও দেখতে পারেন না।
আরও পড়ুন
কাটাছেঁড়া করা মরদেহের মতোই করুণ দশা মর্গটির
দেড়শো বছরের পুরোনো মর্গ যেন নিজেই মৃত
দুই দশক ধরে লাশঘরেই ময়নাতদন্ত
চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের আরএমও ডা. আসিবুল আহসান চৌধুরী জানান, যেখানে মর্গটি আছে সেই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ লাশ সংরক্ষণ রাখার ফ্রিজিং ব্যবস্থা নেই। যার কারণে অনেক সময় অসুবিধায় পড়তে হয়। এভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ময়নাতদন্ত করানো বড় চ্যালেঞ্জ। সঠিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে এবং অনেক সময় রিপোর্টের গুণগত মানেও প্রভাব পড়ছে। আশা করছি সব জটিলতা কাটিয়ে একটি আধুনিক মর্গ নির্মাণ হবে।
চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বাহার মিয়া বলেন, সব জেলার হাসপাতালের পাশে একটি মর্গ থাকে কিন্তু চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে কোনো স্থায়ী মর্গ নেই। যেটি আছে সেটি হাসপাতাল থেকে অনেক দূরে। এতে করে অনেক সময় লাভ সংরক্ষণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ করতে সমস্যা তৈরি হয়। আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য ময়নাতদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমান পরিবেশে কাজ করা সত্যি কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে হাসপাতালে পাশে একটি মর্গ নির্মাণ হবে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম মাহবুবুর রহমান জানান, হাসপাতাল এলাকায় আয়তন ছোট। মাত্র ২ একর জমির ওপর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি নির্মাণ হয়েছে। ভূমি জটিলতা ও বরাদ্দ না থাকায় নতুন মর্গের কাজ শুরু হয়নি। হাসপাতাল থেকে মর্গটি দূরে হওয়ায় জরুরি ময়নাতদন্ত করতে আমাদের সমস্যা পড়তে হয়। হাসপাতালের ভিতরে নতুন মর্গ নির্মাণ না হলেও মেডিকেল কলেজ ভবন নির্মাণ হলে আধুনিক মর্গ, ফ্রিজিং রুম ও যন্ত্রপাতি সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
শরীফুল ইসলাম/আরএইচ/এমএস
What's Your Reaction?