ভাঙন ভাঙন খেলায় দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ

3 hours ago 1
সময় অসময়ে ভাঙন ভাঙন খেলায় দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ। নদীর পানি বাড়লেও ভাঙে, আবার কমলেও একই অবস্থা। ফলে চোখের সামনেই বসতভিটা, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গত কয়েকদিনের ভাঙনে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশতাধিক বসতভিটা নদীর পেটে চলে গেছে। ভাঙনের কারণে আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন দশানী, জিঞ্জিরাম ও ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী মানুষ। এখন ত্রাণ নয়, ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।  জানা যায়, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদনদীর পানি কিছুটা বাড়তে শুরু করলেই দেখা দেয় ভাঙন। নদী তীরবর্তী মানুষের বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীতে চলে যায়। আবার পানি যখন কমতে শুরু করে তখন ভাঙনের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়।  কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে দশানী নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ ও জিঞ্জিরাম নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। পানি কমতে শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নদীভাঙন। মাইলের পর মাইল নদীপাড়ের ফসলি জমি চলে যাচ্ছে নদীতে। বিশেষ করে উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের শেখেরচর, মাইছেনির চর, ভাটি কলকিহারা, খেওয়ারচর, জাগিরপাড়া, আউলপাড়া, নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের কুশলনগর, সাজিমারা, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের আইড়মারী, কুতুবেরচর, বাংগাল পাড়া, আইরমারী, খান পাড়া, চর আইরমারী, চর কামালের বাত্তী এলাকায় নদীভাঙন প্রকট আকার ধারণ করেছে।  প্রতিনিয়ত ভাঙনের ফলে নদীপাড়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের মানুষ। অনেকেই ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন ঘরবাড়ি। কখন যে বসতবাড়ি নদীতে চলে যায়, অনেকেই এই ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।  ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত আউলপাড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুস, ফারুক, শেখেরচর গ্রামের রিপন মিয়া ও কুশলনগর গ্রামের জহুরুল হক বলেন, বেশ কয়েকবার নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন তারা। এবারও ভাঙনের কবলে পড়েছেন। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের।  ইয়াকুব আলী, শহিদ মিয়া, কবিরুল ইসলাম বলেন, তারাও কমবেশি নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া নদী তীরবর্তী ক্ষতিগ্রস্তরা নিতান্তই অসহায় গরিব মানুষ। একাধিকবার ভাঙনের ফলে অনেকের নতুন করে ঘর তোলার সামর্থ্য পর্যন্ত নেই। কিন্তু ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের। চিড়া-মুড়ি-চাল নয়, নদীভাঙনের স্থায়ী সমাধান চান তারা।  এ ব্যাপারে মেরুরচর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে বেশি বন্যা কবলিত হয় মেরুরচর ইউনিয়নের মানুষ। বন্যা না হলেও সময় অসময়ে নদনদীর পানি বাড়লেও যেমন ভাঙে, তেমনি পানি কমলেও বসতভিটা ভাঙনের কবলে পড়ে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।  জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান জানান, নদীভাঙন রোধে প্রকল্পনুযায়ী বেশ কয়েকটি জায়গায় কাজ হয়েছে। তা ছাড়া নদীতে পানি বেশি থাকার কারণে সময়মতো কাজ করা যাচ্ছে না। প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন সাপেক্ষে দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
Read Entire Article