ভাত পড়লে তুলে না খেলে কি তা কবরে বিচ্ছু হয়ে কামড়াবে?

5 hours ago 4

ছোট শিশুদের খাবার খাওয়ানোর সময় একটা দৃশ্য প্রায়ই দেখা যায়, তারা খেতে খেতে ভাত বা তরকারির কিছু অংশ নিচে ফেলে দেয়। তখন আশপাশের বড়রা প্রায়ই সতর্ক করে বলেন, ‘ভাত পড়ে গেলে তুলে খাও, না হলে এগুলো কবরে বিচ্ছু হয়ে কামড়াবে।’

দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সমাজে প্রচলিত এই কথাটি শিশুদের খাওয়ার প্রতি যত্নবান করার একটি উপদেশ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, প্রশ্ন জাগে—এ কথার কি আসলেই ইসলামী শরিয়তে কোনো ভিত্তি আছে? কোরআন-হাদিসে কি এমন কিছু বলা হয়েছে, পড়ে যাওয়া ভাত না খেলে তা কবরে বিচ্ছু হয়ে যাবে?

এই বিষয়ে ইসলামী গবেষণাপত্রিকা মাসিক আল কাউসার-এ প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ছোটদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে খাওয়া, খাদ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং অপচয় থেকে বিরত রাখার শিক্ষা দেওয়া প্রশংসনীয় কাজ। তবে এই শিক্ষা দিতে গিয়ে ভিত্তিহীন ও কুসংস্কারপূর্ণ কথা বলা কখনোই শোভনীয় নয়। শিশুদের ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসের আলোকে বোঝানোই উত্তম ও কল্যাণকর।

হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আহার করতেন, তখন আঙুল চেটে খেতেন এবং বলতেন, ‘খাদ্য পড়ে গেলে তা থেকে ময়লা দূর করে খেয়ে নাও এবং তা শয়তানের জন্য ফেলে রেখো না।’
তিনি আরও আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা পাত্র চেটে খাবে, কারণ তোমরা জানো না খাদ্যের কোন অংশে বরকত রয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম : ২০৩৪, সুনানে আবু দাউদ : ৩৮৪৭, সহিহ ইবনে হিববান : ৫২৪৯)

অর্থাৎ, পড়ে যাওয়া ভাত তুলে খাওয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি সুন্দর শিক্ষা, তবে তা না খেলে ‘কবরে বিচ্ছু হয়ে কামড়াবে’—এমন ধারণার কোনো শরয়ি ভিত্তি নেই। বরং ইসলাম খাদ্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও বরকতের প্রতি শ্রদ্ধা জাগিয়ে তুলতে উৎসাহ দিয়েছে, কুসংস্কার ছড়াতে নয়।
 

Read Entire Article