ভারতের বড় শহরগুলোতে, বিশেষ করে তরুণ জেনারেশন জেন-জি-এর কাছে নকল বিয়ে একটি জনপ্রিয় নতুন ট্রেন্ড হিসেবে দেখা যাচ্ছে। এসব আয়োজনে আসল বিয়ের মতো জমকালো সাজসজ্জা, খাবার, নাচ-গানের আয়োজন করা হলেও সেখানে আসলে কোনো বিয়ে হয় না। এটি মূলত একটি থিম পার্টি যেখানে তরুণরা শুধু বিয়ে ছাড়াই বিয়ের উৎসবের আমেজ উপভোগ করেন।
যারা দীর্ঘদিন গ্রামে যান না এবং এ ধরনের পারিবারিক অনুষ্ঠানগুলো মিস করেন তাদের জন্য ভারতের কিছু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এ ধরনের নকল বিয়ের আয়োজন শুরু করেছে।
এ ধরনের বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে টিকিট কেটে লোকজন অংশ নিতে হয় এসব টিকিটের দাম দুই হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। টিকিট কেটে ঢুকেই বিয়ের অনুষ্ঠান উপভোগ করা যায়। এখানে কোনো ধরনের চাপ নেই, আত্মীয়-স্বজনরা কে কী বলবে সেই চাপ নেই। অর্থাৎ আপনি আপনার মতো সময় কাটাতে পারবেন।
অনেকেই বলছেন, অবশ্যই এটি ভিন্ন একটি অভিজ্ঞতা। যখন আমরা পরিবারের সাথে কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে যাই তখন আমাদের অনেক কিছুই মাথায় রাখতে হয়। ঠিকঠাক মতো কাপড় পরা, আত্মীয়রা কিছু বলছে কি না। কিন্তু এখানে ওসব ঝামেলা নেই।
ভারতে বিয়ের সাজসজ্জা, কেনাকাটাসহ বিয়ে সংক্রান্ত এই শিল্পের আকার প্রায় ১৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। কিন্তু বর্ষাসহ কিছু মৌসুমে বিয়ের আয়োজন কম হয়। তাই এই সময়ে বাজার চাঙ্গা রাখতে এই ফেক বিয়ের আয়োজন শুরু করেছে কিছু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি।
এ ধরনের একটি কোম্পানির এক পরিচালক বলেন, মন্দা মৌসুমেও তো আমাদের ভেন্যুর ভাড়া, খাবার খরচ এবং সবই বহন করতে হয়। তাই ১০ লাখ টাকা খরচ করে হলেও এমন আয়োজন আমাদের জন্য কিছুটা হলেও লাখজনক।
এসব ফেক বিয়েকে উপলক্ষ্য করে মেহেদি অনুষ্ঠান, গান-বাজনার আয়োজনও করা হয়। এসব ফেক বিয়েতে নাচার জন্য বন্ধু-বান্ধবরা মিলে পেশাদার কোরিওগ্রাফারের কাছেও যাচ্ছে এবং টাকা খরচ করে নাচ শিখছে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটা এখন ভারতের একটি ভাইরাল ট্রেন্ড। বিশেষ করে তরুণরা এখানে জমকালো পোশাক পরার সুযোগ পায় যেগুলো সাধারণত তারা অন্য কোথাও পরে না। এসব আয়োজনে অংশ নিয়ে তারা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের জন্য ছবি, ভিডিও বানাচ্ছে।
তাছাড়া এসব আয়োজন যেহেতু বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে করা হয় তাই সব বয়সী তরুণদের কথা বিবেচনা করেই এই আয়োজন করা হয়। এখানে বিয়ের পরে বর-কনে বাড়ি ফিরে যাবে এমন কোনো ব্যাপারও নেই তাই সারারাত ধরেই পার্টি চলতে থাকে।
এসব ফেক বিয়েতে অংশ নেওয়া তরুণ-তরুণীরা জানান, আত্মীয়-স্বজনের বিয়েতে যাওয়ার চেয়ে তারা এ ধরনের অনুষ্ঠানে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। কারণ কবে বিয়ে করছো, ক্যারিয়ার প্ল্যান কি এসব বিষয় নিয়ে কেউ এখানে কোনো প্রশ্ন করে না। আবার বিয়ের পুরো আমেজটাও উপভোগ করা যায়।
টিটিএন