ভারতে আটক পুলিশ কর্মকর্তা আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি
ভারতের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় বাংলাদেশ পুলিশের সিনিয়র এক কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি জানিয়েছে বিএসএফ। শনিবার (২৩ আগস্ট) ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করা হয়। জানা গেছে, আটক ওই পুলিশ কর্মকর্তা আবু সাঈদ হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি, রংপুর মহানগর পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসিপি) মো. আরিফুজ্জামান।
ঘটনাস্থলে হাকিমপুর সীমান্ত চৌকিতে পাহারায় থাকা বিএসএফ-এর ১৪৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের সদস্যরা তাকে আটক করে। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতেই তাকে স্বরূপনগর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া পরিচয়পত্র ও সরকারি নথি দেখে ভারতের পুলিশ নিশ্চিত হয়, তিনি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা এবং তার বাড়ি নীলফামারীর শাহীপাড়া এলাকায়।
তবে তার পরিচয় জানামাত্রই কিছুটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। বিএসএফ ও স্থানীয় পুলিশ তদন্তের স্বার্থে তার নাম-পরিচয় গোপন রাখে। পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় পুলিশের হাতে বাংলাদেশ পুলিশের একজন কর্মকর্তার গ্রেপ্তার হওয়া বিরল ঘটনা।
আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ভারতের ১৪(এ) ধারার ফরেনার্স আইন এবং পাসপোর্ট আইনের ১২ ধারায় মামলা করা হয়েছে। রোববার তাকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন।
গত বছরের ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। দুপুর আড়াইটার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। যদিও শিক্ষার্থীরা সরে যায়, আবু সাঈদ লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পুলিশ তার ওপর ৫০ ফুট দূর থেকে ছররা গুলি চালায়। একপর্যায় তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন গ্রেপ্তার এই সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা।
৪৮ বছর বয়সী আরিফুজ্জামান তখন রংপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এই কর্মকর্তা গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গা ঢাকা দেন। নিজের কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জানা গেছে, সাবেক সহকারী কমিশনার (এসিপি) মো. আরিফুজ্জামান আবু সাঈদ হত্যা মামলার চার নম্বর আসামি। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি সাতক্ষীরায় আত্মগোপনে ছিলেন।