ভিকারুননিসা চড়া বেতন-ফি নেয়, ক্লাসে পড়ান অস্থায়ী শিক্ষকরা

6 hours ago 3

রাজধানীর নামি স্কুল হিসেবে খ্যাত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। অভিভাবক ও ছাত্রীদের পছন্দের শীর্ষে কলেজটি। তবে এবার কলেজটি এইচএসসির ফলাফলে পিছিয়ে পড়েছে। পাসের হার কমেছে, জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা অর্ধেকের নিচে নেমেছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।

ফল বিপর্যয়ের পেছনে অভিভাবকরা কলেজ প্রশাসনকে দায়ী করছেন। তাদের অভিযোগ- চড়া ভর্তি ফি, বেতনের পরও বাড়তি নানা ফি আদায় করে ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ। কিন্তু নামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে ক্লাস নেওয়া বেশিরভাগ শিক্ষকই অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া। তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তাদের।

পাশাপাশি অবৈধভাবে প্রতিটি ক্লাসে বাড়তি শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে তাদের পড়ালেখার খোঁজখবরও শিক্ষকরা রাখেন না বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা।

তাদের দাবি—সমস্যা ও সংকটগুলো নিরসন করে ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুনাম ফিরিয়ে আনতে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর বেইলি রোডে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে মানববন্ধনে এসব অভিযোগ করেন অভিভাবকরা।

মানববন্ধনে অভিভাবক খাজা সলিমুল্লাহ টিপু বলেন, প্রতি মাসেই বেতনের চেয়ে বাড়তি ফি নেওয়া হয়। ল্যাব ফি, জেনারেটর ফি, অবকাঠামো উন্নয়ন ফি নেওয়া হয়। কিন্তু এসবের কোনো সুযোগ-সুবিধা ছাত্রীরা পায় না। উল্টো এখানে ক্লাস নেওয়া হয় বেশিরভাগ অস্থায়ী শিক্ষক দিয়ে। তাদের অনেকের উচ্চতর ডিগ্রি নেই। এনটিআরসিএর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নয়। কোথাও থেকে ট্রেনিংও নেননি তারা। অথচ তাদের দিয়ে বেশিরভাগ ক্লাস করানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ক্লাসের পড়া ক্লাসে শেষ করানোর কথা। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না। শিক্ষকরা প্রাইভেট-কোচিং করান। তাতে মোটা অংকের টাকা দিয়ে আবার শিক্ষার্থীদের সেখানে পড়তে হয়। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা বোর্ড পরীক্ষায় ভালো করতে পারছে না।

মানববন্ধনে আয়েশা আক্তার নামে আরেক অভিভাবক বলেন, শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছে। বাসায় তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দিচ্ছি না। অথচ কলেজে এসে তারা টিকটক বানাচ্ছে। নিজের মোবাইল না থাকলে বান্ধবীর ফোন নিয়ে এটি করছে। এগুলো শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণ করার কথা। কিন্তু সেটা করা হচ্ছে না।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, এবার সামষ্টিক ফলাফলই খারাপ হয়েছে। শুধু যে ভিকারুননিসায় জিপিএ-৫ কম পেয়েছে, তা নয়। তারপরও অভিভাবকরা যে বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বিগ্ন; সেগুলো সমাধানে আমরা কাজ করবো।

গত ১৬ অক্টোবর এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফলে দেখা যায়, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছেন ২ হাজার ৪৩৪ শিক্ষার্থী। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ২ হাজার ৪৯৫ শিক্ষার্থী। অকৃতকার্য হয়েছেন ৬১ জন।

এতে পাসের হার ৯৭ দশমিক ৫৬। গত বছর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাসের হার ছিল ৯৯ দশমিক শূন্য ৬। এ বছর জিপিএ–৫ পেয়েছেন মোট ৯৮৬ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১৭৩৭ জন।

এএএইচ/এমকেআর/জিকেএস

Read Entire Article