ভিনির ডকুমেন্টারিকে চ্যালেঞ্জ ভ্যালেন্সিয়ার, আদালতে যাওয়ার হুমকি

3 months ago 52
সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে সম্প্রচারিত রিয়াল মাদ্রিদ ও ব্রাজিল তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের জীবনভিত্তিক ডকুমেন্টারি ফুটবল বিশ্বে ইতিবাচক আলোচনার জন্ম দিলেও, স্পেনের ক্লাব ভ্যালেন্সিয়া এতে খুঁজে পেয়েছে ‘বাস্তব বিকৃতি’র ছাপ। আর এতেই তৈরি হয়েছে উত্তেজনার নতুন ঢেউ—আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে ক্লাবটি। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া "Vini Jr." নামের এই ডকুমেন্টারিতে তুলে ধরা হয় ২০২৩ সালের ২১ মে মেস্তাইয়া স্টেডিয়ামে (ভ্যালেন্সিয়ার হোম) ঘটে যাওয়া সেই বিতর্কিত রাতের চিত্র, যেখানে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ম্যাচটি কিছুক্ষণের জন্য বন্ধও রাখা হয়েছিল মাঠে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায়। ডকুমেন্টারির এক দৃশ্যে দেখা যায়, গ্যালারিতে মোবাইল ফোনে ধারণ করা একটি ভিডিও ফুটেজে ভিনিসিয়ুসকে উদ্দেশ্য করে কিছু দর্শক “মোনো” (স্প্যানিশ ভাষায় যার অর্থ ‘বানর’) বলে গালি দিচ্ছে। যদিও ভ্যালেন্সিয়া ক্লাবের দাবি, অধিকাংশ দর্শক আসলে “তন্তো” (যার অর্থ ‘মূর্খ’ বা ‘স্টুপিড’) বলেই চিৎকার করছিলেন, যা বর্ণবাদী নয়। ভ্যালেন্সিয়া ক্লাব এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘মেস্তাইয়ায় যা ঘটেছিল, তা ডকুমেন্টারিতে যেভাবে দেখানো হয়েছে, সেটি বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমাদের সমর্থকদের সম্মান ও সত্য প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আমরা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে লিখিতভাবে তাৎক্ষণিক সংশোধনের দাবি জানিয়েছি। আইনি পদক্ষেপের বিষয়েও আমরা বিবেচনায় আছি।’ এই প্রথম নয়। ২০২৩ সালে ব্রাজিলিয়ান তারকা রদ্রিগো যখন বলেছিলেন, ‘পুরো স্টেডিয়াম ভিনিকে বর্ণবাদী গালি দিয়েছিল,’ তখনও ভ্যালেন্সিয়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। তবে সেই ঘটনার এক বছর পর, তিনজন ভ্যালেন্সিয়া সমর্থককে স্পেনের আদালত কারাদণ্ড ও স্টেডিয়াম নিষেধাজ্ঞার রায়ে দণ্ডিত করে, যা ছিল স্পেনের ইতিহাসে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দেওয়া প্রথম দৃষ্টান্তমূলক রায়। ঘটনাটি তখন বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলে, এবং ভিনিসিয়ুসের প্রতি ফুটবল দুনিয়া একাট্টা হয়ে দাঁড়ায়। ভিনিসিয়ুস পরবর্তীতে ২০২৪ সালে ফিফা দ্য বেস্ট পুরুষ ফুটবলারের খেতাব জেতেন, একই বছরে ব্যালন ডি’অর পুরুষ বিভাগে রানার্স-আপ হন। এখন প্রশ্ন উঠছে—এমন এক ঘটনায় যেখানে আদালতের রায়ও এসেছে, সেখানে ডকুমেন্টারিতে প্রকাশিত দৃশ্যের বিরুদ্ধে ভ্যালেন্সিয়ার আপত্তির অর্থ কী? কেবল 'মূর্খ' বলা হয়েছিল, নাকি ‘বানর’ বলা হয়েছিল—এই শব্দের পার্থক্য এখন আইনি ও সামাজিক লড়াইয়ের ইন্ধন হয়ে উঠছে। এই বিতর্কের পরিণতি কী হবে, তা সময়ই বলবে। তবে এটুকু স্পষ্ট—স্প্যানিশ ফুটবলে বর্ণবাদ ঘিরে বিতর্ক এখনো ফুরায়নি।
Read Entire Article