দীর্ঘ এক বছর ধরে ব্রাজিলে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেওয়ার অপেক্ষায় ছিল সাতক্ষীরার দুই শিক্ষার্থী নওশীন ইসলাম ও নুর আহমদ। তারা উপকূলের বাস্তবতা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছে, বক্তব্য অনুশীলন করেছে, প্রস্তুতি নিয়েছে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার। শুধু তাদের নয়, দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের অসংখ্য শিশুর স্বপ্নও জড়িয়ে ছিল এ যাত্রায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভিসা না মেলায় সেই স্বপ্ন ভেঙে গেছে।
ভিসাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ৩০) যোগ দিতে পারেনি তারা। সোমবার (১০ নভেম্বর) রাত ১টার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইনসে তাদের ব্রাজিলের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল।
নওশীন ও নুর আহমদ ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলের বেলেম শহরে অনুষ্ঠিতব্য কপ৩০-এ অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিল জাতিসংঘের ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি) থেকে। সুযোগটি আসে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাগ্রত যুব সংঘের (জেজেএস) ‘স্ট্রেংদেনিং চিলড্রেনস ভয়েস অ্যান্ড লিডারশিপ ইন অ্যাড্রেসিং ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডিজাস্টার রিস্ক ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের মাধ্যমে।
প্রকল্পের প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপক নবকুমার সাহা বলেন, গত অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তারা ঢাকায় অবস্থিত ব্রাজিল দূতাবাসে ভিসার আবেদন করেন। ৩০ অক্টোবর প্রথম দফায় সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়, এরপর সোমবার সকালে দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎকার হয়। বিকেল ৪টার দিকে দূতাবাস থেকে জানানো হয়, ব্রাজিলের অনুমোদন না আসায় আপাতত ভিসা দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে কপ৩০-এ বাংলাদেশের শিশু প্রতিনিধি হিসেবে তাদের অংশগ্রহণ আর সম্ভব হলো না।
বিশ্বের ১৫০টি দেশের প্রায় ১২ হাজার প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন এ বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে। যেখানে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় নতুন অঙ্গীকার নেওয়া হচ্ছে। সেখানে উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বাস্তবতা তুলে ধরার কথা ছিল অষ্টম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী— সাতক্ষীরার আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনাইটেড বিদ্যালয়ের ছাত্রী নওশীন ইসলাম এবং শ্যামনগরের সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র নুর আহমদের।
ব্রাজিলে যেতে না পারায় তারা গভীর হতাশা প্রকাশ করে জানান, আমরা চেয়েছিলাম উপকূলের শিশুদের কষ্ট, ভয় আর সংগ্রামের গল্পটি বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, শুধু আমাদেরই নয়, উপকূলের সব শিশুদের স্বপ্নই থেমে গেল এখানে।

2 hours ago
4









English (US) ·