লক্ষ্মীপুরে এক নারীর হাত ভাঙার ভুয়া এক্স-রে প্রতিবেদন দেখিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলা করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে অন্য একজনের এক্সরে প্রতিবেদন নকল করে মামলার বাদী রুবিনা ইয়াছমিন ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ এ মামলায় চার আসামির পরিবারে ঈদ আনন্দ ম্লান হয়েছে। ঈদের দিন তাদের ঘরে চুলা জ্বলেনি বলে জানিয়েছেন মামলায় অভিযুক্ত খোকন আলমের স্ত্রী স্কুলশিক্ষিকা দিল আফরোজা।
সম্প্রতি লক্ষ্মীপুর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মামলার বাদী রুবিনা একই এলাকার ফরিদ হোসেনের স্ত্রী।
‘ভুয়া হাত ভাঙার প্রতিবেদন’ সংযুক্ত করে করা মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কলেজশিক্ষক খোকনসহ অন্যরা। মামলার অন্য আসামিরা হলেন হারুনুর রশিদ, সাহমুন রশিদ রনি, মামুনুর রশিদ এবং অজ্ঞাতপরিচয় তিনজন। তারা বাঞ্চানগর এলাকার বাসিন্দা। এরমধ্যে খোকন সদর উপজেলার দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক।
দিল আফরোজা জানান, রুবিনা ইয়াছমিনদের সঙ্গে তাদের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা চলমান। বিরোধীয় জমিতে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। ২৫ মার্চ ঘরে ঢুকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রুবিনাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে তার স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলা করা হয়। ফেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একটি এক্স-রে প্রতিবেদন দেখিয়ে সদর হাসপাতাল থেকে পুলিশ কেসের স্লিপ নেওয়া হয়। অথচ ওই প্রতিবেদনটি ভুয়া ছিল। লিপি আক্তার নামের এক রোগীর প্রতিবেদনের নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে রুবিনা মামলার জন্য মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন। মূলত রুবিনার হাত ভাঙেনি। তার স্বামীকে ফাঁসাতে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
ফেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের স্বত্বাধিকারী রেজাউল করিম ও কম্পিউটার অপারেটর নন্দ দুলাল সরকার সই করা প্রত্যয়নপত্রে রুবিনার এক্স-রে প্রতিবেদনটি ভুল বলে সত্যতা স্বীকারও করা হয়।
এ বিষয়ে নন্দ দুলাল সরকার বলেন, ‘রুবিনার সঙ্গে আসা লোক আমাকে ভুল বুঝিয়ে অন্য একজনের এক্স-রে প্রতিবেদন নিয়ে গেছেন। মূলত তিনি কোনো এক্স-রে করেননি।’
তবে রুবিনা ইয়াছমিন দাবি, তার হাত ভেঙেছে। এ ঘটনায় মামলা করেছেন। এক্স-রে প্রতিবেদনটি তার।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোবারক হোসেন বলেন, ঘটনাটির তদন্ত চলছে। তদন্তসাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কাজল কায়েস/এসআর/জিকেএস