ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারকে সহায়তার আহ্বান জাতিসংঘের

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে তিন হাজার ৩৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম স্থানীয় সময় শনিবার (৫ এপ্রিল) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে দুর্যোগ কবলিত দেশটিকে সহায়তা করার জন্য বিশ্ববাসীর প্রতি নতুন করে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের সহায়তা বিষয়ক সংস্থার প্রধান। খবর এএফপির।

গত শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্দালয়ে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৫৪ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ৪ হাজার ৫০৮ জন। এছাড়া এখনও নিখোঁজ রয়েছে ২২০ জন।

ভূমিকম্প আঘাত হানার এক সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও দেশটির বিভিন্ন স্থানে এখনও অনেকেই বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন পার করছেন। এছাড়া বাড়ি-ঘর ধসে পড়ায় অনেকেই রাস্তায় দিন কাটাচ্ছেন।

জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের সহায়তা বিষয়ক সংস্থার প্রধান টম ফ্লেচার সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে বলেন, সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ভয়াবহ। তিনি বলেন, বিশ্বের অবশ্যই মিয়ানমারের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

মিয়ানমারের বিভিন্ন অংশ থেকেই বিধ্বংসী এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সড়ক ও সেতু ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে একদিকে উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।

বেশিরভাগ প্রাণহানি হয়েছে মান্দালয় ও নেপিদোতে। ইউনিসেফের মিয়ানমার প্রতিনিধি জুলিয়া রিস জানিয়েছেন, সেখানে ব্যাপক সহায়তা দরকার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেটি আরও বাড়ছে। জীবনরক্ষাকারী পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ কমে আসছে। আক্রান্ত এলাকাগুলোতে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরবরাহের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে।

মিয়ানমার ফর দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির প্রোগ্রাম উপ-পরিচালক লরেন ইলারি বলেন, কী মাত্রায় ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা বর্তমান পর্যায়ে এসেও আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না। মান্দালয়ের অন্তত ৮০ শতাংশ ভবন ভেঙে পড়েছে।

দেশটির তিনটি হাসপাতাল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ২২টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলছে, আঘাত ও অস্ত্রোপচারের চিকিৎসার জন্য জরুরি সহায়তা দরকার। রক্ত সরবরাহ, চেতনানাশক, অপরিহার্য চিকিৎসা ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সহায়তা প্রয়োজন।

• আরও পড়ুন:
• মিয়ানমার/ ভূমিকম্পের ৪ দিন পার, নিখোঁজদের জীবিত উদ্ধারের আশা প্রায় শেষ
• মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে সেতু-ভবন, রাস্তায় ফাটল
• মিয়ানমারের ৬ অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ১০ হাজারের বেশি ভবন ধসে পড়েছে।

টিটিএন