ভেনেজুয়েলার আরও কাছে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ। এর ফলে শুধু ভেনেজুয়েলাতেই নয়, গোটা ক্যারিবীয় অঞ্চলে বাড়ছে উত্তেজনা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে সামরিক উপস্থিতি আরও জোরদার করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ট্রিনিদাদ ও টোবাগোতে নোঙর করেছে। যুদ্ধজাহাজটি দেশটির রাজধানী পোর্ট অব স্পেনের কাছেই অবস্থান করছে।
জানা যায়, গত রোববার (২৬ অক্টোবর) সেখানে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস গ্রেভলি। এটি একটি দূরপাল্লার নির্দেশিত ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডেস্ট্রয়ার জাহাজ। এতে মার্কিন মেরিন বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। আগামী দিনগুলোতে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নেবেন তারা।
আরও পড়ুন>>
সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় অভিযানের অনুমোদন দিয়েছেন ট্রাম্প
ক্যারিবীয় সাগরে বৃহত্তম মার্কিন রণতরী, ‘যুদ্ধাবস্থা’ তৈরির অভিযোগ ভেনেজুয়েলার
ক্যারিবীয় সাগরে ফের ‘মাদকবাহী নৌকা’ লক্ষ্য করে মার্কিন হামলা
আধুনিক অস্ত্রব্যবস্থা ও হেলিকপ্টার পরিচালনার ক্ষমতাসম্পন্ন এই যুদ্ধজাহাজটি সম্প্রতি মাদকবিরোধী অভিযানে অংশ নিয়েছিল। এর উপস্থিতি এমন এক সময়ে ঘটছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলার মধ্যে উত্তেজনা নতুন করে বাড়ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে। তারা দাবি করছে, মাদক চোরাচালান মোকাবিলায় এ অভিযান চালানো হচ্ছে। তাদের হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যেই শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর (পেন্টাগন) নিশ্চিত করেছে, তারা বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড ওই অঞ্চলে পাঠাচ্ছে।
অন্যদিকে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে ‘একটি মনগড়া যুদ্ধ’ তৈরি করছে। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ভুয়া অভিযোগ ছড়িয়ে তাকে ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ নামে এক সংগঠিত অপরাধচক্রের নেতৃত্ব দেওয়ার মিথ্যা দাবি করছে।
আরও পড়ুন>>
যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলায় ৫০০০ রুশ মিসাইল মোতায়েন করেছেন মাদুরো
লাতিন আমেরিকায় সিআইএ’র গোপন অভিযানের গল্প
পোর্ট অব স্পেন থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক জুলিয়া গালিয়ানো জানিয়েছেন, ট্রিনিদাদ ও টোবাগো সরকার নাগরিকদের আশ্বস্ত করছে যে, যুদ্ধজাহাজের আগমন নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এ ধরনের যৌথ মহড়া নিয়মিতই হয় এবং এটি যুদ্ধের পূর্বাভাস নয়।
তবে স্থানীয় জনগণের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রোববার অনেকেই জানিয়েছেন, তাদের আশঙ্কা, এর ফলে তাদের দেশ কোনো সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।
৬৪ বছর বয়সী ড্যানিয়েল হোল্ডার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ভেনেজুয়েলা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কিছু হলে, আমরা যারা কাছাকাছি আছি, তারাও তার আঁচ পেতে পারি। আমি আমার দেশকে এতে জড়ানোর বিপক্ষে।
জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক জাভেদ আলি বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি প্রদর্শনের একটি কৌশল, যা মাদুরো সরকারের ওপর চাপ তৈরি করছে। তবে তিনি যোগ করেন, কোনো পূর্ণাঙ্গ আগ্রাসনের জন্য এই উপস্থিতি যথেষ্ট নয়।
গত আগস্টে মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলে আটটি নৌযান, ১০টি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং একটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করেছিল। ১৯৮৯ সালে পানামা আগ্রাসনের পর এটিই সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক উপস্থিতি।
শনিবার ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিমির পাদরিনো জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক তৎপরতার জবাবে দেশটি উপকূলীয় প্রতিরক্ষা মহড়া শুরু করেছে, যা বড় ধরনের সামরিক হুমকির মোকাবিলায় প্রস্তুতির অংশ।
সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/

2 hours ago
3









English (US) ·