ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ, দাবি ট্রাম্পের শীর্ষ সহকারীর

ভেনেজুয়েলার তেল আসলে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির তেল শিল্প জাতীয়করণকে ‘চুরি’ বলে অভিহিত করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মিলার লেখেন, ভেনেজুয়েলার তেল শিল্প আমেরিকানদের ঘাম, উদ্ভাবন ও পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে। সেটিকে জবরদখল করা ছিল আমেরিকান সম্পদ ও সম্পত্তির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুরি। তিনি অভিযোগ করেন, এই ‘লুট করা সম্পদ’ সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতা এবং মাদক প্রবাহে ব্যবহার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনের ‘প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর স্থায়ী সার্বভৌমত্ব’ নীতিমালা অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার তেল দেশটির নিজস্ব সম্পদ। যদিও শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো সেখানে তেল অনুসন্ধানে জড়িত ছিল। ভেনেজুয়েলা ১৯৭৬ সালে তেল শিল্প জাতীয়করণ করে এবং রাষ্ট্রীয় কোম্পানি পিডিভিএসএর অধীনে আনে। পরে ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ অবশিষ্ট বিদেশি প্রকল্পগুলোও

ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ, দাবি ট্রাম্পের শীর্ষ সহকারীর
ভেনেজুয়েলার তেল আসলে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ স্টিফেন মিলার। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির তেল শিল্প জাতীয়করণকে ‘চুরি’ বলে অভিহিত করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মিলার লেখেন, ভেনেজুয়েলার তেল শিল্প আমেরিকানদের ঘাম, উদ্ভাবন ও পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে। সেটিকে জবরদখল করা ছিল আমেরিকান সম্পদ ও সম্পত্তির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চুরি। তিনি অভিযোগ করেন, এই ‘লুট করা সম্পদ’ সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে সহিংসতা এবং মাদক প্রবাহে ব্যবহার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনের ‘প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর স্থায়ী সার্বভৌমত্ব’ নীতিমালা অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার তেল দেশটির নিজস্ব সম্পদ। যদিও শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো সেখানে তেল অনুসন্ধানে জড়িত ছিল। ভেনেজুয়েলা ১৯৭৬ সালে তেল শিল্প জাতীয়করণ করে এবং রাষ্ট্রীয় কোম্পানি পিডিভিএসএর অধীনে আনে। পরে ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ অবশিষ্ট বিদেশি প্রকল্পগুলোও জাতীয়করণ করেন। এর ফলে কনোকোফিলিপস ও এক্সনমোবিলের মতো মার্কিন তেল জায়ান্টদের দেশটি ছাড়তে হয়। এ ঘটনায় মার্কিন কোম্পানিগুলো আইনি লড়াই শুরু করে। ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাংকের এক সালিশি ট্রাইব্যুনাল এক্সনমোবিলকে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে ভেনেজুয়েলাকে নির্দেশ দেয়। তবে আইনি প্রক্রিয়া এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। ২০১৯ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্র পিডিভিএসএর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ‘ম্যাক্সিমাম প্রেশার’ বা সর্বোচ্চ চাপ নীতি আরও জোরদার করেছেন। মঙ্গলবার ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার তেলবাহী ট্যাংকারে অবরোধ আরোপের ঘোষণা দেন এবং সেগুলোকে ‘নিষেধাজ্ঞাভুক্ত’ বলে আখ্যা দেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লেখেন, ভেনেজুয়েলা দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নৌবহর দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে... যতক্ষণ না তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে চুরি করা সব তেল, জমি ও সম্পদ ফিরিয়ে দেবে। গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করে মার্কিন সামরিক বাহিনী। কারাকাস একে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ বলে নিন্দা জানায়। গত সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে ভেনেজুয়েলার কাছাকাছি এলাকায় যেসব নৌযানকে মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করছে, সেগুলোর ওপর বোমা হামলা চালাচ্ছে। বহু আইন বিশেষজ্ঞ একে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করছেন। মঙ্গলবার ভ্যানিটি ফেয়ার ম্যাগাজিন জানায়, হোয়াইট হাউস চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস বলেছেন—এই নৌ হামলাগুলোর লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানো। তার ভাষায়, ট্রাম্প ‘মাদুরো আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত নৌকা উড়িয়ে যেতে চান।’ ট্রাম্প প্রশাসন ভেনেজুয়েলার সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। ‘কার্টেল দে লস সোলেস’ নামের একটি কথিত সংগঠনকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করা হয়েছে, যদিও এটি কোনো সুসংগঠিত গোষ্ঠী নয়; বরং সরকারের ভেতরের দুর্নীতির অভিযোগ বোঝাতে ব্যবহৃত একটি শব্দ। ভেনেজুয়েলা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক মাদক প্রবাহ বা মাদুরোর নেতৃত্বে কোনো মাদক কার্টেলের প্রমাণ নেই বলেও উল্লেখ করছেন বিশ্লেষকরা।  

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow