ভোটকর্মীদের আতিথ্য গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা, বাড়ছে ভাতা ও আর্থিক সুবিধা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে ভোট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আচরণবিধি কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মাঠপর্যায়ের নির্বাচনকর্মীরা যাতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের আতিথ্য বা সুবিধার ওপর নির্ভরশীল না হন সে লক্ষ্যেই তাদের ভাতা ও অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। রোববার (৩০ নভেম্বর) সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে অন্য চার কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, পররাষ্ট্র, অর্থ, স্বাস্থ্য, আইন, স্থানীয় সরকার, বিদ্যুৎ, ডাক-টেলিযোগাযোগ, আইসিটি, সড়ক পরিবহন, কারা অধিদফতর, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিভি, বেতার, এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশলসহ মোট ৩৪টি বিভাগের প্রতিনিধি সভায় অংশ নেন। ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আগামী নির্বাচন, গণভোট এবং প্রবাসী ভোট—এই তিনটি বড় ইভেন্টের প্রতিটি ধাপে গুণগত মান নিশ্চিতে সমন্বয় ও সহয
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে ভোট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আচরণবিধি কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মাঠপর্যায়ের নির্বাচনকর্মীরা যাতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের আতিথ্য বা সুবিধার ওপর নির্ভরশীল না হন সে লক্ষ্যেই তাদের ভাতা ও অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
রোববার (৩০ নভেম্বর) সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে অন্য চার কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, পররাষ্ট্র, অর্থ, স্বাস্থ্য, আইন, স্থানীয় সরকার, বিদ্যুৎ, ডাক-টেলিযোগাযোগ, আইসিটি, সড়ক পরিবহন, কারা অধিদফতর, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিভি, বেতার, এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশলসহ মোট ৩৪টি বিভাগের প্রতিনিধি সভায় অংশ নেন।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আগামী নির্বাচন, গণভোট এবং প্রবাসী ভোট—এই তিনটি বড় ইভেন্টের প্রতিটি ধাপে গুণগত মান নিশ্চিতে সমন্বয় ও সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। এ জন্য মাঠ প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে সমন্বয় জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ইসি সচিব জানান, সরকারি প্রেসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপার এবং আর্মি সিকিউরিটি প্রেসে প্রবাসী ভোটের ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানের অনুরোধ করা হয়েছে।
ভোটকর্মীদের আতিথ্য গ্রহণ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, বারবার অভিযোগ উঠেছে যে, দায়িত্ব পালনকারীরা স্থানীয় প্রভাবশালীদের আতিথ্য গ্রহণ করেন। এ পরিস্থিতি দূর করতে ভাতা ও অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেন কেউ পরনির্ভরশীল না হন। পাশাপাশি রিটার্নিং ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদেরও দায়িত্ব ও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
প্রবাসী ভোটের নিবন্ধন বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, কিছু দেশে নিবন্ধন সাময়িক স্থগিত থাকলেও তা পুনরায় চালু হয়েছে। ফরম্যাট সংগতিপূর্ণ না হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছিল, তবে ওয়ান-টু-ওয়ান কমিউনিকেশনের মাধ্যমে তা সমাধান করা হয়েছে।
আখতার আহমেদ জানান, নির্বাচন, আউট অব কান্ট্রি ভোটিং ও গণভোট—এই তিন বিষয়ে বিটিভি ও সংসদ টিভি প্রচারণা শুরু করেছে। প্রাইভেট টিভি চ্যানেলের প্রচারণা আরও বাড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে, যাতে প্রবাসীসহ সব ভোটার যথাযথ তথ্য পান।
ইসির অ্যাপ এখন পর্যন্ত ডাউনলোড করেছেন ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি, নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে প্রায় এক লাখ। ১৮ ডিসেম্বরের আগে সবাইকে নিবন্ধনে উৎসাহিত করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিদেশি মিশন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগসহ একটি সমন্বিত কন্টাক্ট পয়েন্ট তৈরির উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিব বলেন, দেশের ভেতরে ডাকযোগে ভোট দিতে তিন ক্যাটাগরির ভোটারের (সরকারি চাকরিজীবী, নির্বাচনী ডিউটিতে নিয়োজিত ব্যক্তি, আইনি হেফাজতে থাকা ভোটার) নিবন্ধন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নির্দেশনা পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। তেজগাঁও ও এয়ারপোর্টের ব্যালট পেপার সর্টিং সেন্টার পরিদর্শনে স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে ডাক বিভাগকে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার লিড মন্ত্রণালয় হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে।
গণভোট প্রচারণা, প্রবাসী ভোট নিবন্ধন, কন্ডাক্ট রুল এবং এআই-এর অপব্যবহার রোধসহ ভোটার শিক্ষায় সেনসিটাইজেশন বাড়ানোর ওপরও গুরুত্ব দেন ইসি সচিব।
মক ভোটিং বিষয়ক এক প্রশ্নে আখতার আহমেদ বলেন, প্রাথমিক মূল্যায়নে দেখা গেছে, ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো লাগবে না, তবে প্রতিটি বুথে গোপন কক্ষ (স্ট্যাম্পিং সেন্টার) দু’টি করে বাড়ানো হবে, যাতে ভোটার প্রবাহ ঠিক থাকে। এতে বাজেট কিছুটা বাড়লেও গোপনীয়তা বজায় থাকবে।
এক জায়গায় মক ভোটিং করে দেশের সার্বিক চিত্র পাওয়া সম্ভব কি-না—জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, সমতল ও পাহাড়ি এলাকায় বাস্তবতা ভিন্ন হলেও ভোট দিতে সময় এবং বুথ সংখ্যা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এটি একটি প্রাথমিক ধারণা দেয়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক তথ্যের ভিত্তিতে আরও পর্যালোচনা শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।
দু’টি ভোট (সংসদ নির্বাচন ও গণভোট) দিতে একজন ভোটারের কত সময় লাগবে—এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, ভোটার ঘরে প্রবেশ থেকে বের হওয়া পর্যন্ত সময় গণনা করে প্রাথমিক হিসাব করা হয়েছে। চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে তা প্রকাশ করা হবে।
তিনি আরও জানান, মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা এবং তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কিত প্রস্তুতি সন্তোষজনক পর্যায়ে আছে। বিচ্ছিন্ন ঘটনা থাকলেও বড় কোনো সমস্যা নেই। তফসিল ঘোষণার পর সংশ্লিষ্ট দায়িত্ব আরও বেগবান হবে।
এমওএস/এমএমকে/জেআইএম
What's Your Reaction?