‘মন্ত্রী-এমপিরা কারাগারে থাকলে সেনা কর্মকর্তারা কেন নয়’

2 hours ago 5

মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলার আসামি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে তাদের ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় ঘোষিত সাবজেলে রাখার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গুমের শিকার লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাবজেল সৃষ্টি করেছেন, আমি এর বিপক্ষে। কোনো বৈষম্য চলবে না কারও সঙ্গে। আইজিপি, মন্ত্রী-এমপি এবং অন্য লোকেরা যদি দেশের নিয়ম-মাফিক কারাগারে থাকতে পারেন, এনাদের একই জায়গায় থাকতে হবে। বৈষম্য করে বিচার হয় না।’

বুধবার (২২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গুমের শিকার ব্যক্তিদের সংগঠন ইউনাইটেড ফর দ্য ভিকটিমস অব এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্সেস (ইউভিইডি)। সংগঠনটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে ছিলেন গুমের শিকার হাসিনুর রহমানও।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী অপরাধী না। বাহিনীর গুটিকয়েক অসৎ, বিপথগামী সদস্য শেখ হাসিনার প্ররোচণায় এই অপকর্মগুলো করেছেন। আমাদের এ বিষয়ে পরিষ্কার হতে হবে। শুধু আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার জন্য আজ সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য বিপথগামী হয়েছেন।’

‘আমরা ইনসাফ চাই। এই বিচার এই আয়নাঘর আছে, এটা প্রকাশ হয় ২০২২ সালে। কিন্তু (সেনাবাহিনীর) কেউ এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি। কোনো জেনারেলও কথা বলেননি, উচিত ছিল’, বলেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন
১৫ সেনা কর্মকর্তাকে নেওয়া হলো সেনানিবাসের অস্থায়ী কারাগারে
আত্মসমর্পণকারী সেনা কর্মকর্তারা নির্দোষ, অপরাধীরা ভারতে পালিয়েছে
মানবতাবিরোধী অপরাধ: ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

সেনাবাহিনীর এই সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে সহায়তার জন্য সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানকে ধন্যবাদ জানান হাসিনুর রহমান। তবে এই বিচার চলাকালে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের সাবজেলে রাখার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, ‘আমি তো মনে করি, আয়নাঘরে রেখে তাদের বিচার করা উচিত।’

গুমের মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভূমিকার প্রশংসা করেন সেনাবাহিনীর সাবেক এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমাদের তাজুল ভাই (চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম) বা আইসিটি চরম ভালো কাজ করেছেন। এটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। যে সাহসী ভূমিকা... একটা সংশয় ছিল, সেটার এন্ড হইছে।’

তবে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের ক্যান্টনমেন্টে রেখে কোনো তথ্য পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন হাসিনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘অনেকে বলতেছেন আমি শুনছি, এদের অনেকেই নিরপরাধ। কিন্তু তদন্তের সময় তাদের কেউ কথা বলেননি। এই অফিসারদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, কিন্তু কথা বলেনি। এখন যদি ক্যান্টনমেন্টে থাকে, একই কাজ করবে (নিশ্চুপ থাকবে)। আমরা আমি এর ঘোর-বিরোধী।’

প্রয়োজন হলে গুমের ঘটনার পুনর্তদন্ত করতে হবে, কিন্তু সেটা এই কর্মকর্তাদের কারাগারে রেখে দাবি করেন সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসিনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে এসি রুমে রেখে, কাটা চামুচ-প্লেটে... এটা রাখা কোনোভাবেই সম্ভব না। বৈষম্য হলে আমরা ন্যায়বিচার পাবো না। দেশের যারাই এর সঙ্গে যারাই জড়িত, ন্যায়বিচার করতে হবে।’

এফএইচ/বিএ/এমএস

Read Entire Article