‘মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের দিন শেষ’
দুর্নীতির অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। দল ও দলের বাইরে থেকে তিনি পদত্যাগের চাপে রয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে তিনি পদত্যাগ না করলেও তাকে বরখাস্ত করা হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ব্রিটিশ পত্রিকা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস বলছে, হয়ত ট্রেজারি মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের দিন শেষ হতে চলেছে।
টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। দীর্ঘসময় ধরে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন এবং লেবার পার্টির রাজনীতি করেন। তবে সম্প্রতি বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তারও।
অভিযোগ উঠেছে, খালা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিনামূল্যে সম্পত্তি গ্রহণ করেছেন টিউলিপ। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রকাশ করে দাবি করা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পেয়েছেন তিনি।
এ ছাড়াও বাংলাদেশে অবকাঠামোগত ব্যয় থেকে শেখ হাসিনার পরিবারের ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তে টিউলিপের নাম এসেছে। দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার এসব অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর চাপের মুখে পড়েছেন টিউলিপ। অনেকেই মনে করছেন যুক্তরাজ্যে টিউলিপের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার হয়ত এখানেই শেষ।
টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস। সেখানে বলা হয়েছে, টিউলিপ এখনো পদে থাকার কারণ হলো, বিরোধী দল স্টারমারের জন্য তার বন্ধু এবং মিত্রদের সরকারে ধরে রাখার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত খুব একটা চাপ সৃষ্টি করেনি। তারা টিউলিপের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে দেরি করেছে।
তবে বিরোধী দল সুযোগটি এখন বুঝতে পেরেছে। বিরোধীদলের প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ শনিবার রাতে টিউলিপকে বরখাস্ত করার জন্য কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দলটি বলছে, দুর্নীতিগ্রস্ত কোনো মন্ত্রীকে তারা আর দেশের প্রশাসনে দেখতে চায় না। ফলে টিউলিপের বিষয়ে লেবার পার্টির চুপ থাকা এখন কঠিন হয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধীদল এবং ছায়া ট্রেজারি কর্তৃপক্ষ উভয়ই টিউলিপের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে দেরি করেছে। তারা প্রথমে গল্পটি বুঝতে পারেনি। তবে এখন যেহেতু প্রধান বিরোধী দলটি গল্পটি বুঝতে পেরেছে, তাই হতে পারে ট্রেজারি মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিকের দিন শেষ।