মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ নওগাঁ পৌরবাসী, বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী

প্রথম শ্রেণির নওগাঁ পৌরসভায় মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পৌরবাসী। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না কেউই। মশার কয়েল, ধোঁয়া ও স্প্রে সব কিছুই যেন মশার কাছে হার মানছে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করেও যেন রেহাই নেই। এতে বাড়ছে ডেঙ্গু। দুশ্চিন্তায় পৌর বাসিন্দারা। পৌরবাসীর অভিযোগ, পৌরকর বাড়ানো হলেও পৌর সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। মশা নিধনে প্রশাসনিক এলাকাগুলোয় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৫৯ জন আক্রান্ত। অক্টোবরে ১২০ জন এবং সেপ্টেম্বর ১১৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত ৩২৪ জন। নওগাঁ পৌরসভা প্রথম শ্রেণি। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভার জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজারের ওপর। পৌরসভায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার স্তূপ। অধিকাংশ ড্রেনে নেই ঢাকনা। এতে ময়লা-আবর্জনার চাপে ড্রেনের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। আবর্জনায় মশা ও মাছি জন্ম নেয়। নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করা এবং যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনার কারণে মশার উৎপাত বেড়েছে। পৌরসভার মশক নিধন কার্যক্রমের অভাবে মশার বিস্তার চরম আকার ধারণ করে

মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ নওগাঁ পৌরবাসী, বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী

প্রথম শ্রেণির নওগাঁ পৌরসভায় মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পৌরবাসী। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না কেউই। মশার কয়েল, ধোঁয়া ও স্প্রে সব কিছুই যেন মশার কাছে হার মানছে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করেও যেন রেহাই নেই। এতে বাড়ছে ডেঙ্গু। দুশ্চিন্তায় পৌর বাসিন্দারা।

পৌরবাসীর অভিযোগ, পৌরকর বাড়ানো হলেও পৌর সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। মশা নিধনে প্রশাসনিক এলাকাগুলোয় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।

সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৫৯ জন আক্রান্ত। অক্টোবরে ১২০ জন এবং সেপ্টেম্বর ১১৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত ৩২৪ জন। নওগাঁ পৌরসভা প্রথম শ্রেণি। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভার জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজারের ওপর।

পৌরসভায় যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার স্তূপ। অধিকাংশ ড্রেনে নেই ঢাকনা। এতে ময়লা-আবর্জনার চাপে ড্রেনের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। আবর্জনায় মশা ও মাছি জন্ম নেয়। নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করা এবং যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনার কারণে মশার উৎপাত বেড়েছে। পৌরসভার মশক নিধন কার্যক্রমের অভাবে মশার বিস্তার চরম আকার ধারণ করেছে। এতে পৌরবাসী মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

উপদ্রব এমন ভাবে বেড়েছে যে, ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। সন্ধ্যার আগে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করেও রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। মশা কামড়ানোর পর সে স্থানে ফুলে যন্ত্রণা করে। বাসাবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না কেউই। মশার কয়েল, ধোঁয়া ও স্প্রে সব কিছুই যেন মশার কাছে হার মানছে। দিনের আলোতেও মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে কয়েল ব্যবহার করতে হচ্ছে।

শহরের মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা শামিম বলেন, সন্ধ্যার আগেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করতে হয়। তারপর যেন রেহাই নেই। কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। এমন অবস্থা যে, কয়েলের ওপরও মশা ঘোরাঘুরি করে। দিনেও কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। আর মশা যেখানে কামড়ায় সেখানে জ্বালা-যন্ত্রণা করে ও ফুলে ওঠে। কয়েল কিনতে প্রতি দিন ১০ টাকা খরচ হয়। যদি এমন অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

শহরের ডিগ্রি মোড় এলাকার শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন, এত বেশি মশার উপদ্রব বেড়েছে যে, ঠিকমতো পড়াশোনা করা যায় না। কয়েল জ্বালিয়ে মশারির ভেতরে পড়তে হচ্ছে।

শহরের কোমাইগাড়ী মহল্লার আসফাক উদ্দিন বলেন, বাসা থেকে কিছুদূরে পৌর ময়লার ভাগাড়। এ এলাকায় মশা নিধনের তেমন একটা কার্যক্রম চোখে পড়ে না। বছর বছর বাড়ানো হয় পৌরকর। অথচ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত পৌরবাসী।

নওগাঁ পৌরসভা প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মশক নিধনের জন্য তিনটি ফগার মেশিন ও তিনটি হ্যান্ড স্প্রে মেশিন আছে। দুই বছর থেকে পৌরসভায় মশক নিধনের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে পৌর রাজস্ব আয় থেকে মশক নিধনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পৌরসভার প্রতিটি মহল্লায় পর্যায়ক্রমে মশক নিধনের কাজ করা হয়। তবে ফগার মেশিনের চেয়ে হ্যান্ড স্প্রে মেশিনে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে মশার লাভা ধ্বংস করা হচ্ছে।

নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ দিলরুবা সুলতানা বলেন, গত তিন মাসে আমাদের হাসপাতালে মোট ১২০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। হাসপাতাল থেকে তাদের পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

সিভিল সার্জন ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, গত তিন মাসে পুরো জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ৩২১ জন। মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটেনি। আমাদের আরও সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। আমরা জেলাবাসীকে নানা সচেতন ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। কোনো অবস্থাতেই কেউ যেন অবহেলা করে ঘরে বসে না থাকেন। যে কোনো ধরনের জ্বর হোক না কেন, জ্বর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow