মসজিদে নববিতে ৪০ ওয়াক্ত নামাজের বিশেষ ফজিলত আছে কি?

3 months ago 24

মসজিদে নববি ইসলামে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মসজিদ। মসজিদে নববিতে নামাজ আদায় করার সওয়াব অন্যান্য মসজিদে নামাজ আদায়ের চেয়ে অনেক বেশি। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) বলেছেন,

صَلاَةٌ فِي مَسْجِدِي أَفْضَلُ مِنْ أَلْفِ صَلاَةٍ فِيمَا سِوَاهُ إِلاَّ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ وَصَلاَةٌ فِي الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ أَفْضَلُ مِنْ مِائَةِ أَلْفِ صَلاَةٍ فِيمَا سِوَاهُ

আমার এ মসজিদের নামাজ মসজিদে হারাম ছাড়া অন্যান্য মসজিদের এক হাজার নামাজের চেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ। অন্যান্য মসজিদের নামাজের তুলনায় মাসজিদুল হারামের নামাজ এক লক্ষ গুণ বেশি ফজিলতপূর্ণ। (সুনানে ইবনে মাজা ১৪০৬, মুসনাদে আহমাদ: ১৪৬৯৪)

মসজিদে নববির একটি অংশকে হাদিসে ‘রওজাতুম মিন রিয়াজিল জান্নাহ’ বা জান্নাতের অন্যতম উদ্যান বলা হয়েছে। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

مَا بَيْنَ بَيْتِي وَمِنْبَرِي رَوْضَةٌ مِنْ رِيَاضِ الْجَنَّةِ، وَمِنْبَرِي عَلَى حَوْضِي
আমার ঘর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগানসমূহের একটি বাগান আর আমার মিম্বর অবস্থিত আমার হাউজের ওপরে। (সহিহ বুখারি: ১১৯৬, সহিহ মুসলিম: ১৩৯১)

মসজিদে নববিতে ৪০ ওয়াক্ত নামাজের বিশেষ ফজিলত আছে কি?

একটি বর্ণনায় এসেছে, মসজিদে নববিতে একাধারে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করলে জাহান্নামের আজাব ও মোনাফেকি থেকে মুক্তির ছাড়পত্র লিখে দেওয়া হয়। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

مَنْ صَلّى فِي مَسْجِدِي أَرْبَعِينَ صَلَاة لَا يَفُوتُه صَلَاة كُتِبَت لَه بَرَاءَة مِن النَارِ وَنَجَاة مِن العَذَاب وبُرِئَ مِن النفَاقِ.
যে ব্যক্তি আমার মসজিদে চল্লিশ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেو কোনো নামাজ ছুটবে না, তার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও আজাব থেকে মুক্তি লেখা হবে এবং সে মোনাফেকি থেকে মুক্তি লাভ করবে। (মুসনাদে আহমদ: ৩/১৫৫, তাবরানি ফিল-আওসাত: ৫৪৪)

তবে এ হাদিসটির সনদ দুর্বল। এ হাদিসের প্রসিদ্ধ মতন সেটি যা সুনানে তিরমিজিতে রয়েছে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

مَنْ صَلَّى لِلَّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا فِي جَمَاعَةٍ يُدْرِكُ التَّكْبِيرَةَ الْأُولَى كُتِبَ لَهُ بَرَاءَتَانِ: بَرَاءَةٌ مِنَ النَّارِ وَبَرَاءَةٌ مِنَ النِّفَاق
যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য চল্লিশ দিন জামাতে তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ আদায় করে তার জন্য দুটি পরোয়ানা লেখা হয়: জাহান্নাম থেকে মুক্তির পরওয়ানা ও নিফাক থেকে মুক্তির পরওয়ানা। (সুনানে তিরমিজি: ২৪১)

এ বর্ণনা অনুযায়ী উপরোক্ত ফজিলত কোনো মসজিদের সাথে বিশেষায়িত নয়, যে কোনো মসজিদে চল্লিশ দিন জামাতে নামাজ পড়লেই উপরোক্ত ফজিলত লাভ হবে। তাই যদি করো সুযোগ হয়, তাহলে মদিনায় আট দিন অবস্থান করে চল্লিশ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে নববিতে পড়তে পারে।

কিন্তু এ আমলটিকে জরুরি মনে করা বা অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া অনুচিত। এ আমলটি করার জন্য অনেক বেশি উদগ্রীব হয়ে পড়া, এ জন্য সফরসঙ্গীদের কষ্টে ফেলা ঠিক নয়। বরং যে কয়দিন মদিনায় থাকার সুযোগ হয়, সে কয়দিন যেন মসজিদে নববিতে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করা হয়, কোনো নামাজ যেন ছুটে না যায় সেদিকে মনোযোগী হওয়াই যথেষ্ট।

ওএফএফ/জেআইএম

Read Entire Article