‘সুচিত্রা সেনের সিনেমা দেখে কাঁদেননি বা কষ্টে চোখ লাল হয়নি—বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। সিনেমায় তার উপস্থিতি, সিনেমা শেষের পরও অনেকক্ষণ এক অচেতন রেশ রেখে যায় দেহ ও মনে। ভাবুন—বাবা-মা, ভাই-বোন বা পরিবারের অনেকে বসে সিনেমা দেখছেন, সুচিত্রা সেন কি এক অদ্ভুত জাদুবলে আলাদা করে দেয় সবাইকে, সময় থেকে নিয়ে যায় নিজ নিজ বৃত্তে ও স্মৃতিতে। পারস্পরিক সম্পর্ককে অটুট রেখেই কী অবলীলায় ঘুরে বেড়ান সবার মনোজগতে।’ ভূমিকার এক অংশে লেখকদ্বয় এভাবেই চিত্রিত করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা সুচিত্রা সেনকে।
বাঙালির মধ্যবত্তি জীবন ও জীবন সংগ্রামে সুচিত্রা সেন অপরিহার্য। ঘর-সংসার, কর্মস্থল, ব্যক্তি জীবন—সবখানে সংঘাত এড়িয়ে, আপোস না করে, কীভাবে নির্মোহ ও সরল জীবন যাপন করা যায়; তা সুচিত্রা সেন নতুন করে শিখিয়েছেন।
‘সূর্যতপা সুচিত্রা’—বইটি সুচিত্রা সেনকে নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থই বলা চলে। দুই বাংলার খ্যাতিমান মানুষদের সহজ-সরল ভাবনায় উঠে এসেছে এই কিংবদন্তি নায়িকার নানা দিক ও অজানা কথা। আলোচনা-পর্যালোচনা, তর্ক-বিতর্ক, স্মৃতি-অনুস্মৃতি—সবই আছে এ বইয়ে। পড়তে পড়তে মনে হবে সুচিত্রা সেনের সঙ্গে কথা বলছেন পাঠক একান্ত আলাপচারিতায়।
আরও পড়ুন
কলকাতা ও বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখক-কবি-সাংবাদিক, সুচিত্রা সেনের শৈশব-কৈশরের বন্ধু, কর্মজীবনের বন্ধুদের নানা গল্প আছে এ বইয়ে। সুচিত্রা সেনের কিছু দুর্লভ আলোকচিত্রও এতে স্থান পেয়েছে। তৎকালীন দেওয়ালে সাঁটানো তার ছবির মূল পোস্টারও রয়েছে। কীভাবে তখন এসব পোস্টার হতো, সে নিয়ে একটি তথ্যগল্প রয়েছে বইয়ে।
বইটি সম্পাদনা করেছেন দুই সাংবাদিক উম্মুল ওয়ারা সুইটি ও প্রতীক ইজাজ। তারা দুজনেই খুব ভালো গদ্য লেখেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি সংস্কৃতি, গণমুখী আন্দোলন ও মুক্তবুদ্ধিচর্চার নানা দিকে তাদের বিচরণ রয়েছে। এ বইয়ে সুচিত্রা সেনকে নিয়ে তারা নিজেরাও লিখেছেন।
এবারের একুশে বইমেলা উপলক্ষে ‘সূর্যতপা সুচিত্রা’ প্রকাশ করেছে শুদ্ধপ্রকাশ। প্রচ্ছদ করেছেন চারু পিন্টু। পাওয়া যাচ্ছে বাংলা একাডেমির বইমলার ৫১১ নম্বর স্টলে।
এসইউ/এমএস