ভারতের বিপক্ষে আবার মুখোমুখি হওয়ার আগে মোহাম্মদ নওয়াজ যেন নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছেন। পাকিস্তান দলে পোস্টারবয় না হয়েও ব্যাট-বল হাতে ধারাবাহিকতায় তিনি হয়ে উঠছেন দলের অন্যতম ভরসা।
মোহাম্মদ নওয়াজের এই গল্প শুরু হয়েছিল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ড্রেসিংরুমে। ভারতের বিপক্ষে নাটকীয় ম্যাচে শেষ ওভার হেরে গিয়ে চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি নওয়াজ। তখনই অধিনায়ক বাবর আজম এগিয়ে এসে বলেছিলেন, ‘তুমি আমার ম্যাচ-উইনার, সবসময় বিশ্বাস থাকবে তোমার ওপর।’ সেই সমর্থনই হয়তো নতুন নওয়াজকে জন্ম দিয়েছে।
তবে পাকিস্তান দলে তার অবস্থান কখনোই খুব স্থায়ী ছিল না। কখনও তিন নম্বর, কখনও ৯ নম্বরে ব্যাট করা, আবার কখনও একেবারেই দলে সুযোগ না পাওয়া— নওয়াজকে যেন সবসময় পরীক্ষামূলক খেলোয়াড় হিসেবেই ব্যবহার করা হয়েছে। ২০১৬ সালে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত অভিষেক ঘটলেও ধারাবাহিক সুযোগ পাননি তিনি।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে বদলে গেছেন নওয়াজ। জুলাইয়ে বাংলাদেশ সফরে দলে ফেরা থেকে শুরু করে শেষ ১২ টি-টোয়েন্টিতে তিনি অসাধারণ প্রভাব ফেলেছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকসহ পাঁচ উইকেট নিয়েছেন, আবার ব্যাট হাতে দ্রুত রান তোলার ক্ষমতা— সব মিলিয়ে তিনি পাকিস্তানের নতুন কৌশলের মূল স্তম্ভে পরিণত হয়েছেন।
কোচ মাইক হেসনও তার উচ্চ প্রশংসা করেছেন, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি বোলার নওয়াজ।’ পরিসংখ্যানও তা বলছে— চলতি বছরে তার চেয়ে বেশি উইকেট কোনো আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশের বোলার পাননি (২১ উইকেট), আর অন্তত ২০০ বল করা বোলারদের মধ্যে তার ইকোনমি (৬.৪৭) সেরা।
যদিও নওয়াজকে প্রচলিত অর্থে ম্যাচ-উইনার বলা যাবে না। তিনি পাকিস্তানের সেরা স্পিনার নন, সেরা ব্যাটারও নন; কিন্তু একই ম্যাচে কখনও দুটো ভূমিকাই পালন করতে পারেন, আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সেটিই ম্যাচ জেতানোর মতো অবদান রাখতে সক্ষম।
ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপে তিন বছর আগে তিনি যেদিন পাকিস্তানকে ২০ বলে ৪২ রান করে জেতালেন, এবার আবার সেই স্মৃতিই তাকে ঘিরে রাখছে। হয়তো আজ আবারো প্রমাণ করার সুযোগ আসবে— মোহাম্মদ নওয়াজ সত্যিই পাকিস্তানের অঘোষিত ট্রাম্প কার্ড কি না।
আইএইচএস/