মা-বোন তুলে গালি দিলেই জরিমানা করবে যে গ্রাম

1 month ago 16
আমাদের চারপাশে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে ঝগড়ায় প্রায় মা-বোন তুলে গালি দিতে দেখা যায়। আর এসব গালি এতটাই জঘন্য হয়ে থাকে, যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। এমন বিব্রতকর অবস্থা মোকাবেলায় এবার মা-বোন তুলে গালি দিলে জরিমানার বিধান করেছে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে গালিগালাজ নিয়ন্ত্রণে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মা-বোন তুলে গালি দিয়ে জরিমানার এমন নিয়ম করেছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের আহমেদনগর জেলার নেভাসা তালুকের সৌন্দালা গ্রাম। বর্তমান বিজেপি সরকারের সময়ে জেলাটির নাম পরিবর্তন করে অহল্যানগর রাখা হয়েছে। জেলাটির সৌন্দালা গ্রামে প্রায় দুই হাজার বাসিন্দা রয়েছে। গ্রামে ঢুকতেই একটি বড় ব্যানারে গ্রাম পঞ্চায়েতের নেয়া জারিমানার সিদ্ধান্তের কথা বড় করে লেখা রয়েছে, যাতে সবাই নিয়মটি সম্পর্কে জানতে পারে।  পঞ্চায়েত প্রধান শরদ আরগাড়ে জানান, মা ও বোনেদের সম্মানের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গ্রামসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে যারা এ জাতীয় গালি দেবেন, তাদের ৫০০ টাকা করে জরিমানা করা হবে। এই নিয়ম কিন্তু পুরুষ এবং নারী দু'জনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। কেউ এ ধরণের গালি দিচ্ছে কিনা তা নজরদারি করতে গ্রামের সর্বত্র সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। এসব সিসিটিভিতে মাইক্রোফোনও রয়েছে। সাধারণত যখন কোনও ব্যক্তি প্রকাশ্যে গালিগালাজ করেন, তখন তিনি উচ্চস্বরেই গালিগালাজ করে থাকেন। এরপর এই বিষয়টা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হবে, যাচাই করা হবে।  পঞ্চায়েত প্রধান জানান, যখন কোনো ঝগড়া শুরু হয় তখন তা দু'জনের মধ্যে হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে সেখানে দশ-বারো জন জড়ো হয়, সেখান থেকেই কোনো ব্যক্তি বলে দিতে পারবেন কে গালি দিয়েছে। প্রায়ই দেখা যায়, যে সময় গ্রামসভা কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তখন গ্রামের অনেকেই হয় মাঠে কাজ করেন অথবা অন্য কোনও কাজের জন্য বাইরে থাকেন। তাই তাদের পক্ষে সব সময় গ্রামসভায় যোগ দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। সে কথা মাথায় রেখে, গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার লাগানো হয়েছে। যাতে মানুষ এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে পারেন। এই ব্যানারের মাধ্যমে গ্রামবাসীদের মধ্যে সচেতনতাও ছড়িয়ে পড়ে। গ্রাম পঞ্চায়েতের গালি নিষিদ্ধ ও জরিমানার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। তেমনই অন্যান্য গ্রামগুলোতেও বিব্রতকর ভাষা ব্যবহার বন্ধে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা, যাতে কোনও মা-বোনেরা আর অপমানিত না হন।
Read Entire Article