মা-মেয়েকে হত্যা, গৃহকর্মীর ভয়ংকর অতীত জানাল পুলিশ
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তারের পর অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ওই গৃহকর্মীর ভয়ংকর অতীতও উঠে এসেছে পুলিশের তদন্তে। রাজধানীর মিন্টো রোডে মিডিয়া সেন্টার সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এস এন মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, আয়েশা চুরির উদ্দেশ্যেই মোহম্মদপুরের ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয়। চুরি ধরে ফেলায় প্রথমে মাকে হত্যা করে। পরে মেয়ে দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করে। হত্যার পর বাসায় চুরি করে স্কুল ড্রেস পরে পালিয়ে যান আয়েশা। মোহাম্মদপুর থানা সূত্রে জানা যায়, সন্দেহভাজন গৃহকর্মী আয়েশা ঘটনার তিনদিন পূর্বে উক্ত বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয়। কাজের যোগ দেওয়ার পূর্বে তার নাম, ঠিকানা ও যোগাযোগের কোনো ফোন নম্বর উক্ত বাসায় কারও কাছে ছিল না। সন্দেহভাজন আয়েশাকে শনাক্তে পুলিশ ওই ভবনের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে। কিন্তু কাজে আসা যাওয়ার সময় সে মুখ ঢেকে রাখতো, যে কারণে আয়েশাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এমনকি তার বাসার ঠিকানাও কেউ জানতো না। এক পর্যায়ে আয়েশা সম্পর্কে কোনো তথ্য না পেয়ে মোহাম
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে গ্রেপ্তারের পর অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ওই গৃহকর্মীর ভয়ংকর অতীতও উঠে এসেছে পুলিশের তদন্তে।
রাজধানীর মিন্টো রোডে মিডিয়া সেন্টার সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আয়েশা চুরির উদ্দেশ্যেই মোহম্মদপুরের ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয়। চুরি ধরে ফেলায় প্রথমে মাকে হত্যা করে। পরে মেয়ে দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করে। হত্যার পর বাসায় চুরি করে স্কুল ড্রেস পরে পালিয়ে যান আয়েশা।
মোহাম্মদপুর থানা সূত্রে জানা যায়, সন্দেহভাজন গৃহকর্মী আয়েশা ঘটনার তিনদিন পূর্বে উক্ত বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয়। কাজের যোগ দেওয়ার পূর্বে তার নাম, ঠিকানা ও যোগাযোগের কোনো ফোন নম্বর উক্ত বাসায় কারও কাছে ছিল না। সন্দেহভাজন আয়েশাকে শনাক্তে পুলিশ ওই ভবনের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে। কিন্তু কাজে আসা যাওয়ার সময় সে মুখ ঢেকে রাখতো, যে কারণে আয়েশাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এমনকি তার বাসার ঠিকানাও কেউ জানতো না।
এক পর্যায়ে আয়েশা সম্পর্কে কোনো তথ্য না পেয়ে মোহাম্মদপুর থানায় গত এক বছরে গৃহকর্মী কর্তৃক চুরির ঘটনাসমূহ পর্যালোচনা করে গলায় পোড়া দাগ এবং জেনেভা ক্যাম্প এলাকার আয়েশা নামের এক গৃহকর্মীর খোঁজ পায় পুলিশ। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর তদন্তে গত জুলাই মাসে মোহাম্মদপুর থানার হুমায়ুন রোডের এক বাসায় চুরির ঘটনায় আয়েশার জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে।
পরে পুলিশ তার সঙ্গে যোগাযোগের একটি মোবাইল থেকে নম্বর পায়। ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে জানা যায় তার মোবাইল নম্বরটি কখন কে ব্যবহার করেছেন তিনি সঠিক মনে করতে পারছেন না। তবে কিছুদিন পূর্বে তার ফোনে ডিসপ্লে নষ্ট থাকায় রাব্বি নামে তার এক ছোট ভাইকে ঠিক করার জন্য দেন এবং এই সময় সিমটি রাব্বির ফোনে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। এভাবে রাব্বিকে শনাক্ত করা হয়। পরে পিুলিশ জানতে পারে রাব্বির স্ত্রীর নামই আয়েশা, সে মানুষের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে।
পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। একইভাবে জানা যায় গৃহকর্মে নিয়োজিত থেকে চুরি করার অভ্যাস তার আগে থেকেই ছিল।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, চাঞ্চল্যকর এই জোড়া খুনের কারণ অনুসন্ধানে আয়েশা বলে, কাজে আসার দ্বিতীয় দিনে সে বাসা থেকে দুই হাজার টাকা চুরি করে। এ নিয়ে আয়েশাকে প্রশ্ন করলে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। লায়লা আফরোজ আয়েশাকে পুলিশে দেয়ারও ভয় দেখান। চতুর্থ দিন কাজে আসার সময় আয়েশা বাসা থেকে একটা সুইচ গিয়ার চাকু নিয়ে আসে। ঘটনার দিন টাকা চুরি নিয়ে তাদের মধ্যে আবারও কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আয়েশা লায়লা আফরোজকে সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। এ সময়মেয়ে নাফিসা তার মাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। ছুরিকাঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মা ও মেয়ে দুজনেই মারা যান বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।
সুরতহাল প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মেয়ে নাফিসার শরীরে ছিল ৪টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন।
What's Your Reaction?