মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো শিশুদের স্মরণে চিঠি প্রদর্শনী

15 hours ago 4

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো শিশুদের স্মরণে রাজধানীর পূর্বাচলে আয়োজিত হয়েছে চিঠি প্রদর্শনী। শনিবার (১৬ আগস্ট) দিনব্যাপী ষড়ঋতু উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। 

সাজানো চিঠিগুলোতে ভেসে উঠেছে অসমাপ্ত খেলার গল্প, আঁকাবাঁকা হোমওয়ার্ক আর বুকভরা অভিমান। শোককে শক্তিতে রূপ দিয়ে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তার দাবি তুলেছেন অভিভাবকরা।

চিঠি, আঁকা ছবি আর ফুলের মাধ্যমে চলে হারানো শিশুদের স্মরণ। অঝোর কান্না নয়, বরং চিঠির পাতায় জমে ওঠে না বলা অনেক কথা। দেয়ালচিত্রে কবিতা ও গল্পের মাধ্যমেও অকালে প্রাণ হারানো শিশুদের স্মরণ করেন তারা। বন্ধু-স্বজন হারানোর শোক ছড়িয়ে পড়ে সবার কণ্ঠে।

একটি চিঠিতে একজন লেখেন, প্রিয় চিঠি, ঠিকানার অভাবে লেখা চিঠিগুলো জড়িয়ে যাচ্ছে বেগুনি কচুরিপানা ফুলের পাপড়িতে। কুড়িয়ে নিতে পারলে নিও, ফুলদানির দখলে থাকা সমস্ত ভুল ও বরশীর মুখ আলপন অতিকায় আবেগীয় ভাষাবিস্তারের হাত টেনে ধরতে চিঠির। ইতি কতিপয় কবি।

প্রদর্শনীতে আসা অভিভাবকরা বলেন, মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির মত ভয়াবহ দুর্ঘটনা আর যেন না ঘটে। শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি হিসেবে উল্লেখ করেন তারা। একইসঙ্গে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর আহ্বান জানান তারা।

আরেকটি চিঠিতে একজন লেখেন, প্রতিদিন একই নিয়মে সূর্য্য ওঠে কিন্তু প্রতিদিনই নতন সকাল হয় প্রতিদিন একই নিয়মে পাখিরা গায় কিন্তু প্রতিদিন একই নিয়মে ঘরে ফেরা হয় না হয়তোবা-তোরাও-সেদিন একই নিয়মে স্কুল ড্রেস পড়েছিলি, নতুন সকালে বলেছিলি ‘প্রেজেন্ট প্লিজ ম্যাম’ কিন্তু নিয়ম মতো ঘরে ফিরে এলিনা আর। আবার সূর্য্য ওঠে, আবার নতুন সকাল একই নিয়মে স্কুলের দরজা খুলে যায়, নতুন কোলাহল, স্কুল মাঠে বিষন্ন বন্ধুরা খোঁজে ছাই রঙা মেঘ। তোরা কোথায়, কোথায়? ???

এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রথম শ্রেণির জোহান নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, একদিন ছুটি হবে, আমার প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি ওই পাড়ে খুব ভালো আছো। আমার ওপর রাগ করেছো বুঝি? দেরি হয়েছে বলে? আমার কি দোষ বলো? ঠিকানা খুঁজে পেতে একটু দেরি হয়ে গেল। আগের ঠিকানায় তোমাদের আর পেলাম না যে। তোমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে? আমারও খুব কষ্ট হচ্ছে। আকাশে প্লেন উড়তে দেখলে ছুটে যেতাম বারান্দায়, আর এখন শুধু ভয় হয়। তোমাদের জন্য আমাদের সবার খুব খারাপ লাগে। দোয়া করি, তোমরা যেন জান্নাতের বাগানে ঘুরে বেড়াতে পারো। ভালো থেকো। ইতি—তোমার বন্ধু জোহান

নির্ভয় ভূমিপুত্র নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছে, আমরা এক স্কুলে পড়িনি। কখনও আমাদের পরিচয় হয়নি একে অপরের সাথে। হয়তো বা কখনও সামনাসামনি হয়েছি আমরা..... কিন্তু পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছি নিজেদের জায়গায়। এতো যে কষ্ট পেয়ে চলে গেলে তোমরা, এমনটা তো হবার কথা ছিল না! মা-বাবা, বন্ধুদের ছেড়ে যাবার কথা ছিল না... ইতি—নির্ভয় ভূমিপুত্র।

Read Entire Article