মাউশিতে ৪ শতাধিক শিক্ষা ক্যাডারের স্মারকলিপি

3 hours ago 5

আন্তঃক্যাডার এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্যের এক চরম নজির বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার। এ ক্যাডারে ৩৩তম বিসিএসের সদস্যরা চাকরিতে যোগদান করেন ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট। চাকরির ১২ বছরে এসেও এই ব্যাচের প্রায় ৩৫০-এর মতো প্রভাষকের এখনো জোটেনি চাকরিজীবনের প্রথম পদোন্নতি।

কেবল বিসিএস ৩৩ ব্যাচ না, ৩২ ব্যাচেরও প্রায় অর্ধশত কর্মকর্তা বিষয়ভিত্তিক বৈষম্যের কারণে আজও পদোন্নতি বঞ্চিত। তাছাড়া ৩৫ ব্যাচ পর্যন্ত সব যোগ্যতা অর্জন করে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ে পদোন্নতিযোগ্য প্রায় এক হাজার ২২৭ কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন পদোন্নতি বঞ্চনা একদিকে যেমন সামাজিক, মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির কারণ অন্যদিকে তা গুণগত শিক্ষারও অন্তরায়। ধারণা করা হয়েছিল, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিসিএস সাধারণ শিক্ষায় যুগান্তকারী ও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য যে, পদোন্নতির মতো সাধারণ ও স্বাভাবিক বিষয়ও আজ সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে।

৩২ ও ৩৩ ব্যাচের প্রায় শতাধিক পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তা রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) পদোন্নতির দাবিতে মাউশিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। তারা মাউশির ডিজিসহ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

রোববার বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও সারা দেশ থেকে আগত শিক্ষা ক্যাডারের পদোন্নতি বঞ্চিত প্রভাষকরা মুখে এবং বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে শিক্ষা ভবননের সম্মুখে অবস্থান নিয়েছে। অবস্থান শেষে মাউশির ডিজি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আজাদ খান এবং বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. খান মাঈন উদ্দিন খান সোহেলের সঙ্গে আলোচনা এবং স্মারকলিপি প্রদান করেন। অতি শিগগিরই প্রভাষকদের বন্ধ পদোন্নতির ডিপিসি চালুর আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ ১৭ মাস ধরে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পর্যায়ের পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। গত ৪ জুন প্রভাষকদের পদোন্নতির ডিপিসি বসেছিল। দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়, আত্তীকৃত শিক্ষকদের মামলার কারণে পদোন্নতি প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। অথচ আদালতের পর্যবেক্ষণে কোথাও বলা হয়নি পদোন্নতি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে। 

মাউশি ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা অ্যাসোসিয়েশনের নানা সূত্র থেকে জানা যায়, প্রভাষক পর্যায়ে পদোন্নতিতে কোর্টের মামলা মুখ্য বাধা নয়। প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে পদোন্নতির সংখ্যা নিয়ে মতভেদ। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শূন্য পদের বাইরে পদোন্নতি দিতে নারাজ। মন্ত্রণালয়ের হিসাবে পদোন্নতি দিলে পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তার পদোন্নতি হতে পারে। এ সংখ্যা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা অ্যাসোসিয়েশন মানতে রাজি নয়। 

অতীতে দেখা গেছে, মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা অ্যাসোসিয়েশন বা মাউশি দরকষাকষি করে খুব একটা লাভবান হতে পারেনি। বরং সময় নষ্ট হয়। তাই সংখ্যা বিবেচনায় না নিয়ে প্রতি বছর নিয়মিত পদোন্নতি প্রদানই হতে পারে দীর্ঘ পদোন্নতি বঞ্চনা লাঘবে উত্তম পন্থা। 

এদিকে পদোন্নতির দাবিতে ৩৩ ব্যাচের সদস্যরা প্রায় ৪০ দিন ধরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাউশি ও অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চলেছেন তাদের পদোন্নতির বিষয়ে অগ্রগতি জানতে। কিন্তু উচ্চপর্যায় থেকে কোনো সুখবর না পাওয়ায় তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা কাজ করছে। এর মধ্যেই তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করল।
 

Read Entire Article