মাঘের শীতেই দিনাজপুরে আসতে শুরু করেছে আমের মুকুল। সোনালী মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখর গোটা জেলা। চাষিদের আশা এবার আমের ফলন ভালো হবে।
জেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলায় পাঁচ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়ে থাকে। আবহাওয়ায় অনুকূলে থাকলে আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সুস্বাদু হওয়ায় বিদেশেও রপ্তানি হয় এখানকার আম। তবে জেলায় এখনো এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়নি।
জেলায় গোপালভোগ, মিশ্রীভোগ, ফজলি, হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপালি, নাগ ফজলি, ব্যানানা, কার্টিমন জাতের আম উৎপাদন হয়।
আম চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় দিনাজপুরের আমের কদর রয়েছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর জেলায় আম চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এবারও দিনাজপুরে রেকর্ড পরিমাণ আমের ফলন হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন বাগান, বাড়ির বসতভিটায় ও আঙিনার আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। মুকুলের সঙ্গে ফুলে ফুলে মৌমাছির গুঞ্জন আর ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দে এলাকা মুখরিত হতে শুরু করেছে।
কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের আম চাষি পবিত্র কুমার রায় জানান, মুকুল আসার আগেই আম গাছের পরিচর্যা করতে হয়। নিয়মিত স্প্রে ও সেচ দেওয়া শুরু হয়েছে। এবার কিছুটা আগে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। গাছগুলোতে মুকুল আসতেই ঢাকা, রংপুর, চট্রগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার আম ব্যবসায়ীরা আসতে শুরু করেছেন। তারা বাগানে বাগানে গিয়ে খবর নিচ্ছেন। অনেকে আগাম আম বাগান কিনছেন।
রহুল আমিন নামের এক কৃষক বলেন, গাছের বয়স ১২-১৫ বছর হবে। গত দুই বছর ধরে আগাম মুকুল আসছে। এটি গুটি জাতের আম। এবারও আগাম মুকুল দেখে মনটা ভালো লাগছে। এ মুকুল টিকে থাকলে এবার বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, ঘন কুয়াশা দেখা দিলে আমের মুকুল পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এবার ঘন কুয়াশার সঙ্গে রোদও দেখা যাচ্ছে।
দিনাজপুর শহরের মডার্ন মোড়ে মন্দির চত্বরে আম গাছে মুকুল এসেছে। গাছের নিচে পৌর মার্কেটের কম্পিউটার ব্যবসায়ী খোকন বলেন, গত দুই তিন বছর ধরে গাছটিতে আগাম মুকুল আসছে। এবারও প্রচুর মুকুল এসেছে।
এ বিষয়ে দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো. আনিছুজ্জামান বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগে আবহাওয়াগত ও জাতের কারণে মূলত আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, প্রতিবছর কিছু আম গাছে আগাম মুকুল আসে। এবারও আসতে শুরু করেছে। ঘন কুয়াশার কবলে না পড়লে এসব গাছে আগাম ফলন পাওয়া যায়। আর আবহাওয়া বৈরী হলে ফলন মেলে না। তবে নিয়ম মেনে শেষ মাঘে যেসব গাছে মুকুল আসবে সেসব গাছে মুকুল স্থায়ী হবে।
আরএইচ/জিকেএস