জামালপুরের মাদারগঞ্জে বন্যায় মাটি সরে গিয়ে একটি সেতু দেবে গেছে। এতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সেতুটি। তা সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা। দ্রুত সংস্কার না হলে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়নের বীরপাকেরদহ এলাকায় অবস্থিত। পাঁচ মাস আগে বন্যার সময় সেতুর নিচের মাটি সরে গিয়ে দেবে যায়। সেতুটি সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় এটির ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, বন্যার পানির স্রোতে মাটি সরে গিয়ে সেতুটির একপাশ দেবে গেছে। ভেঙে গেছে দুপাশের সংযোগ সড়ক। সেতুর ওপর দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচলাও খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা সেতুটির পাশে বাঁশ বেঁধে ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫৪ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা রাসেল মাহমুদ জানান, সেতুটি নির্মাণের পর থেকেই প্রতিবার বন্যায় দুপাশের সংযোগ সড়ক ভেঙে যায়। স্থানীয়রা প্রতিবারই মেরামত করে কোনোরকম চলাচলের উপযোগী করেন।
স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেরাব বলেন, ‘প্রতিদিন কষ্ট করে স্কুলে যেতে হচ্ছে। সেতুটির সংযোগ সড়ক নেই। খুব কষ্ট করে সেতুর পাশ দিয়ে বাঁশ বেয়ে পার হতে হয়। কয়েকবার সেতু থেকে পড়েও গিয়েছিলাম।’
বীরপাকেরদহ গ্রামের খোকন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিনে সেতুটি সংস্কার না করায় দুর্ভোগে রয়েছেন। প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ ঘুরে কৃষিপণ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন মালামাল আনা-নেওয়া করতে হয়। সেতুটি ব্যবহারের উপোযোগী করা হলে অল্প সময়ে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল উপজেলা সদর এবং আশপাশের বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে যেতে পারবেন।
সোহেল আহমেদ নামের একজন বৃদ্ধ বলেন, ‘সেতুটির বেহাল দশা। আমাদের পারাপার হতে খুব কষ্ট হয়। বিশেষ করে কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়া এখন অসম্ভব হয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল জানান, বন্যার পানির স্রোতে সেতুটি ভেঙে পড়েছে। সেখানে নতুন একটি গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদন হলে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।
মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাইদা খানম লিজা বলেন, সেতুটির বিকল্প হিসেবে আমরা একটি গার্ডার সেতু প্রস্তাব পাঠিয়েছি।
এসআর/জেআইএম