মাতৃদুগ্ধে মিলেছে ইউরেনিয়াম, দাবি গবেষকদের

স্তন্যদানকারী মায়েদের দুধে বিপজ্জনক মাত্রার ইউরেনিয়াম শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দূষণ শিশুদের জন্য অ-ক্যানসারজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। রোববার (২৩ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে এ গবেষণা চালানো হয়েছে।  এতে বলা হয়েছে, অখিল ভারতীয় আয়ুর্বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান (এআইআইএমএস) দিল্লির অধ্যাপক এবং গবেষণার সহলেখক ডা. অশোক শর্মা এএনআইকে জানান, ৪০ জন স্তন্যদানকারী মায়ের দুধ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতিটি নমুনাতেই ইউরেনিয়াম রয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ শিশু সম্ভাব্য অ-ক্যানসাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকির আওতায় পড়লেও, সামগ্রিক ইউরেনিয়ামের মাত্রা অনুমোদিত সীমার নিচে ছিল। ফলে বাস্তবিক প্রভাব খুব বেশি হওয়ার সম্ভাবনা কম। গবেষণায় দেখা গেছে— সর্বোচ্চ গড় দূষণ খাগাড়িয়া জেলায়। এছাড়া এককভাবে সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া গেছে কাটিহার জেলায়। ইউরেনিয়াম-দূষিত দুধ দীর্ঘমেয়াদে শিশুদের যে ক্ষতি করতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে— কিডনি গঠনে ব্যাঘাত, স্নায়

মাতৃদুগ্ধে মিলেছে ইউরেনিয়াম, দাবি গবেষকদের

স্তন্যদানকারী মায়েদের দুধে বিপজ্জনক মাত্রার ইউরেনিয়াম শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দূষণ শিশুদের জন্য অ-ক্যানসারজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

রোববার (২৩ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে এ গবেষণা চালানো হয়েছে। 

এতে বলা হয়েছে, অখিল ভারতীয় আয়ুর্বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান (এআইআইএমএস) দিল্লির অধ্যাপক এবং গবেষণার সহলেখক ডা. অশোক শর্মা এএনআইকে জানান, ৪০ জন স্তন্যদানকারী মায়ের দুধ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রতিটি নমুনাতেই ইউরেনিয়াম রয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ শিশু সম্ভাব্য অ-ক্যানসাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকির আওতায় পড়লেও, সামগ্রিক ইউরেনিয়ামের মাত্রা অনুমোদিত সীমার নিচে ছিল। ফলে বাস্তবিক প্রভাব খুব বেশি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

গবেষণায় দেখা গেছে— সর্বোচ্চ গড় দূষণ খাগাড়িয়া জেলায়। এছাড়া এককভাবে সর্বোচ্চ মাত্রা পাওয়া গেছে কাটিহার জেলায়। ইউরেনিয়াম-দূষিত দুধ দীর্ঘমেয়াদে শিশুদের যে ক্ষতি করতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে— কিডনি গঠনে ব্যাঘাত, স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব এবং বুদ্ধিমত্তা হ্রাসসহ বিভিন্ন মানসিক ও জ্ঞানীয় সমস্যা।

ডা. শর্মা জানান, যে মাত্রায় ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে, তা বাস্তবে গুরুতর প্রভাব ফেলবে এমন সম্ভাবনা কম। ইউরেনিয়ামের অধিকাংশই মায়ের শরীর থেকে প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়, দুধে ঘনীভূত হয় না। তাই চিকিৎসাগত প্রয়োজন না হলে স্তন্যদান বন্ধ করার কোনো কারণ নেই।

তিনি জানান, অন্যান্য রাজ্যেও ভারী ধাতু শনাক্ত করতে একই ধরনের গবেষণা করা হবে, কারণ মানবদেহে এদের প্রভাব বোঝা এখন অত্যন্ত জরুরি।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের ১৮ রাজ্যের প্রায় ১৫১টি জেলায় ভূগর্ভস্থ জলে ইউরেনিয়াম দূষণ রিপোর্ট হয়েছে। শুধু বিহারেই প্রায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ ভূগর্ভস্থ পানির উৎসে ইউরেনিয়াম পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরেনিয়াম স্বাভাবিকভাবে শিলা এবং মাটিতে থাকে এবং ভূগর্ভস্থ জলে মিশে যেতে পারে। পাশাপাশি—খনি, কয়লা জ্বালানো, পারমাণবিক শিল্প, ফসফেট সার ব্যবহারের ফলে দূষণ আরও বাড়তে পারে।

গবেষকরা জানান, পূর্ববর্তী গবেষণায় মায়ের দুধে আর্সেনিক, সিসা, ও পারদের উপস্থিতি ধরা পড়েছিল। ভবিষ্যতে কীটনাশকসহ অন্যান্য পরিবেশ দূষকের উপস্থিতিও পরীক্ষা করা হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow