মাত্র ১৪ দিন চিনি না খেলে ঘটবে আশ্চর্যজনক পরিবর্তন!

3 hours ago 4

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কোনো না কোনোভাবে চিনি থাকেই। কিন্তু এই চিনি আমাদের যেসব সমস্যা করে তা অনেক সময় আমরা ঘূর্ণাক্ষরেও বুঝতে পারি না। অ্যালকোহলের মতো চিনিও আসক্তিকর। কারণ, চিনি সরাসরি রক্তে মিশে যায় এবং অতি উচ্চ মাত্রার ফ্রুকটোজ তৈরি করে নেশা সৃষ্টি করে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য।

চিনির অন্য নাম ‘হোয়াইট পয়জন’ বা সাদা বিষ। বেশি চিনি বা চিনিযুক্ত খাবার খেলে খুব ক্লান্ত লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে, চিন্তাশক্তি কমে আসতে শুরু করে এবং শরীরে চর্বি জমতে শুরু করে। অনেকেই মনে করেন- চা খেলে ক্লান্তি কমে কিংবা ঝিমঝিম ভাব চলে যায়। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। চিনি দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত চা খেলে আরও বেশি ক্লান্তি ভাব আসে। এজন্য সীমিত চা খেতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্র ১৪ দিন চিনি না খেলে মানুষের মাঝে একটা আশ্চর্যজনক পরিবর্তন ঘটবে। হজম না হওয়া কিংবা নিদ্রাহীন রাত কাটানোর মতো সমস্যা দূর করতে পারে মাত্র ১৪ দিন চিনিমুক্ত থাকতে পারলে। 

প্রথম তিন দিন সবচেয়ে কঠিন। কারণ, প্রথমে আপনার শরীরকে চিনি না খাওয়াতে অভ্যস্ত করাতে হবে। কিন্তু কোনো ‘নেশাদ্রব্য’ হঠাৎ করে বন্ধ করলে শরীরে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ সময় মাথাব্যথা, পেটব্যথা, ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। এ সময় চিনির যে ক্ষতিকর উপাদান শরীরে জমা ছিল, শরীর তা নিষ্কাশনের কাজ শুরু করবে। তবে শরীরের অন্য সব প্রক্রিয়া চলতে থাকবে স্বাভাবিক নিয়মে।

চতুর্থ দিন থেকে মনোযোগ ও শক্তি বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে। এ সময় আপনি শারীরিক শক্তি ও মনোযোগ ফিরে পেতে শুরু করবেন। সপ্তম দিনে নিজেকে শক্তিশালী ভাবতে থাকবেন। আপনার মনোযোগ আগের চেয়ে বেড়ে যাবে।

শরীর চিনিমুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার পাচনতন্ত্র দারুণভাবে কাজ করতে শুরু করবে। এটা অষ্টম দিন থেকেই শুরু হবে। এ সময় অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ভারসাম্য খুঁজে পেতে শুরু করবে। পেট ফোলাভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা কমতে শুরু করবে।

দ্বিতীয় সপ্তাহের পর থেকে ঘুম ভালো হতে শুরু করবে। এ সময় আপনার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও কমতে শুরু করবে। চিনি শরীরের ঘুমচক্রে বিঘ্ন ঘটায়, তাই আপনার নিদ্রাহীনতা দূর হয়ে ভালো ঘুম হবে। এ সময় ক্ষুধা কমে গেলে আপনার বারবার খেতে ইচ্ছা করবে না বলে ওজনও কমে যাবে।

১৪ দিনের চিনিমুক্ত জীবন শুরু করলে আপনি দীর্ঘমেয়াদি কিছু সুবিধাও পাবেন। যেমন হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমবে, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে, রক্তে শর্করার মাত্রা থাকবে স্থিতিশীল। শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, কিডনির সমস্যা, চোখের সমস্যা এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব নিয়ন্ত্রণে থাকবে ১৪ দিন চিনি না খেলে। 

খাদ‌্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দেওয়ার ফলে, ব্রণ ও একজিমা কমতে শুরু করবে। মেজাজ এবং স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটবে। এ ছাড়া বিষণ্নতা দূর হয়ে যাবে এবং কাজে মনোযোগ ফিরে পাবেন। 
 

Read Entire Article