মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজের সবগুলো ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তবুও এরমাঝেই চলছে শিক্ষাকার্যক্রম। এতে আতঙ্ক নিয়ে শ্রেণিকার্যক্রম করতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। ঝুঁকির কারণে দিন দিন শিক্ষার্থী সংখ্যা কমছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এরই মধ্যে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে কলেজের আবাসিক হোস্টেল।
জানা গেছে, ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কলেজটি। এরপর ১৯৯০ সালে কলেজের ৮টি ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে কলেজটিতে সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষার্থী আছে। এছাড়াও ৬৮ জন শিক্ষক ও ২২ জন কর্মচারী কর্মরত আছেন।
নির্মাণের পর ভবনগুলোর উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে সংস্কারের অভাবে ভবনগুলো এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অ্যাকাডেমিক ভবনের তৃতীয় তলায় ছাত্রদের আবাসিক হোস্টেল। যেখানে বড় বড় ফাটল থাকায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় পলেস্তারা খসে পড়ছে নিয়মিত। আবার কোথাও বড় বড় রড বের হয়ে গেছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
- আরও পড়ুন:
- মাদারীপুরে স্টেডিয়াম যেন মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য
- কাজে আসছে না মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের ৩ কোটি টাকার আইসিইউ
সংশ্লিষ্টরা জানান, একসময় কলেজটিতে ৭ হাজার শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে এ সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকে। অনেক শিক্ষার্থী ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের জন্য ভর্তি হচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
কলেজের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শফিক হোসেন বলেন, শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় আমরা আতঙ্কে থাকি। মনে হয় কখন যেন পলেস্তারা মাথার ওপর খসে পড়ে।
কলেজের আরেক শিক্ষার্থী কামাল হোসেন বলেন, আগে আমি কলেজের আবাসিক হোস্টেল ছিলাম। কিন্তু তা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে আমরা সবাই বাইরে থাকছি। এতে খরচ বেশি হচ্ছে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মুজিবুর রহমান বলেন, কলেজটিতে মোট ৯টি ভবন আছে। এরমধ্যে ৮টি ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সবার দাবি দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক।
মাদারীপুর শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রজনী কুমার চাকমা বলেন, বরাদ্দ না থাকায় নতুন ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তা দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।
আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এমএন/এএসএম