মাদারীপুরে বেনজীরের ৯০ একর জমি, বেশিরভাগই স্ত্রীর নামে

3 months ago 58

মাদারীপুর-গোপালগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকা মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা। এ উপজেলাতেও ফসলি জমি দখলে নিয়েছেন সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ৯০ একর জমি ১১৩টি দলিলে কিনে নিয়েছেন তিনি। দলিলগুলো বেশিরভাগই বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জিশান মীর্জার নামে। সম্প্রতি দুদকের আবেদনের পর সবগুলো দলিলের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জমির মালিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের রাজৈরে দুই বছরে ১১৩টি দলিলে ৯০ একর জমি কিনেছেন বেনজীর আহমেদ। এ সম্পত্তির প্রায় সবগুলোই ফসলি জমি। জোর করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের সাতপাড় ডুমুরিয়া মৌজা, নটাখোলা ও বড়খোলা এলাকার ফসলি জমি কিনে নেয় বেনজীরের পরিবার। তৈয়ব আলী নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমেই সব জমি বেচাকেনা হয়েছে। জমি লিখে না দিলে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে অনেকে, এমন অভিযোগও একাধিক।

মাদারীপুরে বেনজীরের ৯০ একর জমি, বেশিরভাগই স্ত্রীর নামে

রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি গ্রামের ভাষারাম সেন বলেন, ‘আমাদের বংশের লোকজনের কাছ থেকে ২৪ একর ৮৩ শতাংশ ফসলি জমি কিনে নেন সাবেক পুলিশপ্রধান। বিঘাপ্রতি সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছেন। আমরা জমি দিতে চাইনি। প্রায় দুই বছর আগে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে এই জমি লিখে নেন বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার।’

মাদারীপুরে বেনজীরের ৯০ একর জমি, বেশিরভাগই স্ত্রীর নামে

সাতপাড় ডুমুরিয়া গ্রামের বৃদ্ধা সরস্বতী রায় বলেন, ‘এই জমিতে ফসল ফলিয়ে আমাদের খাবার জোগাড় হতো। কিন্তু সেই জমি আমাদের ভয় দেখিয়ে লিখে নিয়েছেন বেনজীর আহমেদ।’

মাদারীপুরে বেনজীরের ৯০ একর জমি, বেশিরভাগই স্ত্রীর নামে

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এক নেতা বলেন, ‘যতটুকু জেনেছি সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ ভয় দেখিয়ে রাজৈরের অসহায় মানুষদের কাছ থেকে জমি কিনেছেন। ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই সনাতন ধর্মাবলম্বী। তদন্ত করে অপরাধীর বিচার হওয়া উচিত।’

মাদারীপুরে বেনজীরের ৯০ একর জমি, বেশিরভাগই স্ত্রীর নামে

মাদারীপুরের উন্নয়ন সংস্থা দেশগ্রামের নির্বাহী পরিচালক এবিএম বজলুর রহমান খান বলেন, ‘গোপালগঞ্জে বেনজীরের বাড়ি। তবুও তিনি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় বহু সম্পত্তি কিনেছেন। অসহায় মানুষদের ভয় দেখিয়ে এগুলো তিনি কিনেছেন। তার সঠিক বিচার হলে অন্যরা এগুলো করতে সাহস পাবে না।’

এ বিষয়ে মাদারীপুর আদালতের আইনজীবী গোলাম কিবরিয়া বলেন, জোর করে কারও সম্পত্তি লিখে নেওয়া ফৌজদারি অপরাধ। এ অপরাধে ভুক্তভোগীরা চাইলে মামলা করতে পারেন।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এসআর/জেআইএম

Read Entire Article