জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ভাঙচুর ও চুরির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত চিকিৎসক এইচ এম মাহমুদ হারুনকে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজে বদলি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গত ১৯ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য দেওয়া হয়।
ডা. মাহমুদ হারুন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ বছরের জুলাই মাসে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে মানসিক রোগ বিভাগের প্রশিক্ষণার্থী এক নারী চিকিৎসককে কুপ্রস্তাব ও হয়রানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত হয়।
আরও পড়ুন
- বিসিএসে বয়সসীমায় ‘বৈষম্য’, ৩৪ বছরের দাবি চিকিৎসকদের
৪ দফা দাবিতে সারাদেশে চিকিৎসকদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’
তদন্তে জানা গেছে, এ বছরের ৬ আগস্ট তিনি কয়েকজন বহিরাগত চিকিৎসক নিয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালকের কক্ষসহ ৬ শিক্ষকের কক্ষ ভাঙচুর করেন। এসময় কক্ষগুলো থেকে ল্যাপটপ, মনোরোগ বিদ্যার দামি বইসহ মূল্যবান বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি হয়। এছাড়াও ইনস্টিটিউটের বেশ কিছু ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা এবং ক্যামেরার রেকর্ড করার যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ব্যাপারে ইনস্টিটিউটের তৎকালীন পরিচালকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রনালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত দল ইনস্টিটিউটে তদন্ত করতে আসে এবং এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত চিকিৎসক মাহমুদ হারুন, ডা. মো. সফিকুল কবির (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওএসডি সহযোগী অধ্যাপক), ডা. এস এম ইয়াসির আরাফাত (বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের সাইকিয়াট্রিস্ট) সহ ইনস্টিটিউটের কয়েকজন নার্স ও কর্মচারীর ব্যাপারে তদন্ত করে।
উল্লেখ্য, ইনস্টিটিউটের সাবেক উপপরিচালক ডা. মো. সফিকুল কবিরকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ তারিখে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থেকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালীতে নিয়োগ দেয়। কিন্তু ওএসডি হওয়ার পরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে যোগদান না করে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে তিনি গত প্রায় চার মাস ধরে নিয়মিত জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে আসেন, উপপরিচালকের কক্ষ দখল করে সেখানে বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করেন এবং অফিস সময়ের পরও প্রায়ই রাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। ওএসডি হওয়ার পরও তিনি ইনস্টিটিউটের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করছেন। এই চিকিৎসকের অবৈধ অবস্থান ও দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাসপাতালে অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
ইনস্টিটিউটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এক নার্সিং সুপারভাইজারকে এ মাসের শুরুতে চাঁদপুরে বদলি করে অধিদপ্তর। সর্বশেষ, গত ১৯ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনে ইনস্টিটিউটে ভাঙচুরকারী ডা. মাহমুদ হারুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজে বদলি করেছে।
এএএম/এএমএ