মামলার ছয়দিনেও গ্রেফতার হয়নি আসামি, পরিবারের ক্ষোভ

মাদারীপুরের শিবচরে এক স্কুলছাত্রী (১৬) আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা হওয়ার ছয়দিন অতিবাহিত হলেও এখনো আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবার। তাদের দাবি, দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া হোক। পুলিশ, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের আলেপুর গ্রামের মেয়ের সঙ্গে একই গ্রামের রিফাত উকিল নামে এক যুবকের প্রেমের সর্ম্পক হয়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় প্রভাবশালী ইব্রাহিম মাদবরের নেতৃত্বে প্রেমিক রিফাত উকিল, নয়ন, রিফাত মাদবরসহ বেশ কয়েকজন গত ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় স্কুলছাত্রীর বাড়িতে যান। সেখানে প্রকাশে ইব্রাহিম মাদবরসহ তার সঙ্গে আসা অন্যরা মিলে ছাত্রী ও তার পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, অপমান ও হুমকি-ধামকি দেন। এই অপমানে পর স্কুলছাত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরে ওই রাতেই নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সেখানে ময়নাতদন্তের পর ২১ নভেম্বর জুম্মার নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এদিকে এই ঘটনা

মামলার ছয়দিনেও গ্রেফতার হয়নি আসামি, পরিবারের ক্ষোভ

মাদারীপুরের শিবচরে এক স্কুলছাত্রী (১৬) আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা হওয়ার ছয়দিন অতিবাহিত হলেও এখনো আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নিহতের পরিবার। তাদের দাবি, দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া হোক।

পুলিশ, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের আলেপুর গ্রামের মেয়ের সঙ্গে একই গ্রামের রিফাত উকিল নামে এক যুবকের প্রেমের সর্ম্পক হয়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় প্রভাবশালী ইব্রাহিম মাদবরের নেতৃত্বে প্রেমিক রিফাত উকিল, নয়ন, রিফাত মাদবরসহ বেশ কয়েকজন গত ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় স্কুলছাত্রীর বাড়িতে যান। সেখানে প্রকাশে ইব্রাহিম মাদবরসহ তার সঙ্গে আসা অন্যরা মিলে ছাত্রী ও তার পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, অপমান ও হুমকি-ধামকি দেন। এই অপমানে পর স্কুলছাত্রী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরে ওই রাতেই নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সেখানে ময়নাতদন্তের পর ২১ নভেম্বর জুম্মার নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এদিকে এই ঘটনার বিচারের দাবিতে ২৪ নভেম্বর দুপুরে শিবচর উপজেলার উমেদপুর অজিফা রবিউল্লাহ লাইসিয়াম উচ্চ বিদ্যালয়ের নিহতের সহপাঠি, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা মিলে চান্দেরচর বাজারে মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে ওই দিনই তারা স্থানীয় শহীদ মিনারে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে অভিযুক্ত ইব্রাহিম মাদবর, রিফাত উকিল, রিফাত মাদবর, নয়ন মাদবরের বিচারের দাবি তুলেন।

নিহতের সহপাঠি সুমি আক্তার বলেন, বান্ধবীর আত্মহত্যা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। তাই পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি যাদের জন্য আত্মহত্যা করেছে, তাদের যেন দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

নিহতের বাবা বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী ইব্রাহিম মাদবর লোকজন নিয়ে বাড়িতে এসে আমার মেয়েকে প্রকাশ্যে অপমান করেছেন। সেই লজ্জা ও অপমানের কষ্ট সইতে না পেরে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনায় আমি মামলা করেছি। কিন্তু এখনও কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি। আমি দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানাই।

নিহতের বড় বোন বলেন, আমি বিদেশে থাকি, আমার মাও বিদেশে থাকেন। আমার বোন নানির কাছে থাকে। খবর পেয়ে আমি এসে দেখি আমার বোনের মরদেহ পরে আছে। বোন অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। আমি ইব্রাহিম মাদবর, রিফাতসহ যারা আমার বোনকে অপমান করেছে, সবার বিচার চাই।

নাম না প্রকাশে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ইব্রাহিম মাদবর এলাকার প্রভাবশালী। সে সব সময় এলাকায় প্রভাব দেখান। এই ঘটনায় মামলা হয়েছে। সেই মামলার ছয়দিন হলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। আমরা দ্রুত আসামিদের গ্রেফতারের দাবি জানাই।

অভিযুক্ত ইব্রাহিম মাদবরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনায় নিহতের বাবা মামলা করেছেন। দ্রুত এই ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) মো. সালাহ উদ্দিন কাদের বলেন, স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এনএইচআর/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow