মালয়েশিয়ায় ১৫ লাখ বাংলাদেশির নেই কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

মালয়েশিয়ায় বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ প্রবাসী কর্মরত থাকলেও চিকিৎসা সেবায় বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক নেই বললেই চলে। ফলে অসুস্থ হলে অধিকাংশ প্রবাসীকেই নির্ভর করতে হয় স্থানীয় সরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি ক্লিনিক অথবা ব্যয়বহুল প্রাইভেট মেডিকেল সেন্টারের ওপর। কেউ কেউ সামর্থ্যের অভাবে চিকিৎসা নেন না। যা ভবিষ্যতে জটিল রোগে রূপ নিচ্ছে বলে মনে করছেন প্রবাসীরা। জোহরের কোটা তিঙ্গিতে কর্মরত প্রবাসী আব্দুল করিম জানান, বাংলাদেশে যেমন পরিচিত চিকিৎসককে দেখাতে পারি, মালয়েশিয়ায় তেমন কেউ নেই। রিপোর্ট বুঝতে সমস্যা হয়, চিকিৎসা খরচও বেশি। অনেক সময় ভাষাগত প্রতিবন্ধকতায় সমস্যাটা ভালোভাবে বোঝাতেই পারি না। কুয়ালালামপুরের গোম্বাকে কর্মরত শাহীন আলম বলেন, অনেকেই ছোটোখাটো রোগ নিয়ে দেরি করেন, কারণ চিকিৎসা ব্যয় বহন করা কঠিন। যদি বাংলাদেশি চিকিৎসকসহ একটি মেডিকেল সেন্টার থাকত, প্রবাসীদের জন্য সেটা বড় সহায়তা হতো। মালয়েশিয়ায় মেডিকেল সেক্টরে কাজের যোগ্যতা ও নিবন্ধনের জন্য কঠোর শর্ত রয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) ও মালয়েশিয়া মেডিকেল কাউন্সিলের (এমএমসি) সার্টিফিকেশন ছাড়াও বিদেশি চিকিৎসকদের জন্য র

মালয়েশিয়ায় ১৫ লাখ বাংলাদেশির নেই কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

মালয়েশিয়ায় বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ প্রবাসী কর্মরত থাকলেও চিকিৎসা সেবায় বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ কোনো চিকিৎসক নেই বললেই চলে। ফলে অসুস্থ হলে অধিকাংশ প্রবাসীকেই নির্ভর করতে হয় স্থানীয় সরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি ক্লিনিক অথবা ব্যয়বহুল প্রাইভেট মেডিকেল সেন্টারের ওপর। কেউ কেউ সামর্থ্যের অভাবে চিকিৎসা নেন না। যা ভবিষ্যতে জটিল রোগে রূপ নিচ্ছে বলে মনে করছেন প্রবাসীরা।

জোহরের কোটা তিঙ্গিতে কর্মরত প্রবাসী আব্দুল করিম জানান, বাংলাদেশে যেমন পরিচিত চিকিৎসককে দেখাতে পারি, মালয়েশিয়ায় তেমন কেউ নেই। রিপোর্ট বুঝতে সমস্যা হয়, চিকিৎসা খরচও বেশি। অনেক সময় ভাষাগত প্রতিবন্ধকতায় সমস্যাটা ভালোভাবে বোঝাতেই পারি না।

কুয়ালালামপুরের গোম্বাকে কর্মরত শাহীন আলম বলেন, অনেকেই ছোটোখাটো রোগ নিয়ে দেরি করেন, কারণ চিকিৎসা ব্যয় বহন করা কঠিন। যদি বাংলাদেশি চিকিৎসকসহ একটি মেডিকেল সেন্টার থাকত, প্রবাসীদের জন্য সেটা বড় সহায়তা হতো।

মালয়েশিয়ায় মেডিকেল সেক্টরে কাজের যোগ্যতা ও নিবন্ধনের জন্য কঠোর শর্ত রয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) ও মালয়েশিয়া মেডিকেল কাউন্সিলের (এমএমসি) সার্টিফিকেশন ছাড়াও বিদেশি চিকিৎসকদের জন্য রয়েছে পৃথক মূল্যায়ন, ভাষা দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ শর্ত। এসব জটিলতা অনেক যোগ্য চিকিৎসকের মালয়েশিয়ায় চাকরি পাওয়া বা প্র্যাকটিস শুরুকে কঠিন করে তুলছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

ঢাকার মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা আন্তর্জাতিক মানে কাজ করার সক্ষমতা রাখেন। তবে মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে সমঝোতা ও নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজীকরণ জরুরি।

চিকিৎসা শিক্ষা ও উন্নয়ন গবেষক ডা. তানভীর হোসেন বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি মেডিকেল গ্র্যাজুয়েটদের জন্য চাকরির প্রচুর সুযোগ আছে। মালয়েশিয়ায় বড় শ্রমবাজার থাকায় এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাঠানো গেলে প্রবাসীদের চিকিৎসা ব্যয় কমবে এবং মানসম্মত সেবা নিশ্চিত হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ সরকার যদি স্বাস্থ্য ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবন্ধন, মূল্যায়ন ও লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া সহজীকরণে কাজ করে, তবে দক্ষ চিকিৎসক পাঠানোর ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে। পাশাপাশি বাংলাদেশি মালিকানায় হাসপাতাল বা কনসালটেশন সেন্টার স্থাপন করলে লাখো প্রবাসীর জরুরি স্বাস্থ্য চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

অনেক প্রবাসী মনে করেন, বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিকেল টেকনিশিয়ান থাকলে চিকিৎসাসেবা যেমন সহজ হবে, তেমনি স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও জরুরি রোগ নির্ণয়ের হারও বাড়বে।

জোহরে থাকা দীর্ঘদিনের প্রবাসী আবুল হাসান বলেন, আমরা শ্রম দিয়ে দেশের রেমিট্যান্স বাড়াই। এখন সময় এসেছে আমাদের স্বাস্থ্যসেবায় রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নেওয়ার।

মালয়েশিয়ায় ১৫ লাখ প্রবাসী, কিন্তু নেই কোনো বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এই বাস্তবতা প্রবাসী সমাজে দুশ্চিন্তা তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমন্বিত উদ্যোগ নিলে প্রবাসীদের চিকিৎসা সেবায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে বাংলাদেশ।

এমআরএম/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow