মিশর প্রবাসীরা কোরবানির পশু কেনেন যে দ্বীপ থেকে

3 months ago 34

মিশরে আগামী রোববার পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে দেশটিতে ততই বাড়ছে কোরবানির পশু বেচাকেনা।

এদেশে কোরবানির পশু বিক্রির আলাদা তেমন কোনো হাট নেই। রাস্তার পাশে, মহল্লার অলি গলি, কিংবা কসাইদের দোকানের পাশে বিক্রি করা হয় কোরবানির পশু। দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের মাঝে যে কজন পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করেন, তাদের মধ্যে অনেকেই কোরবানি করে থাকেন।

আর তারা কোরবানির পশু কিনতে বেছে নেন জাজিরাতুল মা'দী নামের নীলনদের একটি ছোট দ্বীপ গ্রামকে। দুই হাজার কৃষক পরিবার বসবাসরত এই দ্বীপের পশুগুলোকে প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে লালন পালন করা হয় বলেই বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রথম পছন্দ ঐ দ্বীপের পশু। যদিও শহররের অন্যান্য জায়গার তুলনায় এই দ্বীপের পশুর দাম একটু বেশি।

রাজধানী কায়রোসহ দেশটির অন্যান্য শহর বা গ্রামের বাসা বাড়ির ছাদে অনেকেই পশু পালন করেন। তাছাড়াও নীলনদের দক্ষিণ পাড়ে গিজা জেলায় আল-মানশি নামের একটি পশুর হাট রয়েছে, অনেকে সেখান থেকেও পশু কেনেন।

শা'ফী মাজহাবের দেশটির মুসলমানদের বিশ্বাস কোরবানি করা সুন্নত। এদেশে কোরবানি করার পাশাপাশি জিলহজ মাসের চাঁদ উঠার পর পরেই বিত্তবানদের অনেকেই মাংস কিনে গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দিতে দেখা যায়। এ সময় কসাইদের দোকান এমনকি সুপারশপগুলোতেও বছরের অন্য সময়ের তুলনায় প্রচুর পরিমাণ মাংস বিক্রি হয়।

মিশরীয়দের কাছে কোরবানির জন্য সবচেয়ে পছন্দের পশু হলো খা'রুফ বা দুম্বা। তারপর গরু, উঠ ও মহিষ। প্রাপ্তবয়স্ক একেকটি দুম্বার গড় ওজন ৫০ থেকে ৭৫ কেজি। কোনোটির ওজন ১২০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। মিশরীয়রা ছাগল দিয়ে কোরবানি করে না বললেই চলে। তাই ছাগলের দাম অন্যান্য পশুর তুলনায় কম।

দেশটিতে বাংলাদেশর মতো কোরবানির পশু কেনা নিয়ে কোনো প্রতিযোগিতা নেই। অনেক মিশরীয়রা কসাইয়ের দোকান থেকে মাংস কিনে সেখানেই ছোট ছোট পুটলা বানিয়ে ব্যাগে ভরে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। যখনই কোনো শ্রমিক, রাস্তা ঝাড়ুদার, গরিব এমনকি কর্তব্যরত সাধারণ পুলিশ কিংবা নিরাপত্তার কাজে কর্মরত লোক দেখেন, তখনই গাড়ি থামিয়ে তাদের হাতে ধরিয়ে দেন মাংসের ব্যাগ বা পুটলা।

মিশরে ঈদের জামাত শেষ হওয়ার পর থেকে তিনদিন পর্যন্ত কোরবানি করে থাকেন মুসলমানেরা। বিভিন্ন মসজিদে দেখা যায় কোনো ধর্নাঢ্য ব্যক্তি বা সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনদিন ধরে একের পর এক কোরবানি করে গরিবদের মাঝে মাংস বিলিয়ে দিতে।

সাধারণত কোরবানি ঈদের আগে মিশর সরকার পশু বেচাকেনার দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তবে মহল্লার অলিগলিতে এসবের তোয়াক্কা না করেই কিছু কম বা বেশি দামে বিক্রি করে পশু।

রাজধানী কায়রোর বিভিন্ন রাস্তা ও মহল্লার পশু বিক্রির দোকান ঘুরে দেখা গেছে, খারুফ (দুম্বা) বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি বাংলাদেশি টাকায় ৬শত টাকা। ম্যাকসি (ছাগল/পাঠা) ও গেদ্দী (ছাগী) বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৫শত টাকা করে। গামাল (উট), বাকারা (গরু), গামুছা (মহিষ) বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি বাংলাদেশি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।

এমআরএম/এএসএম

Read Entire Article