মীর জাফরের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মিল রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন লেখক এবং অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য।
রোববার (১৭ নভেম্বর) ইতালির বাণিজ্যিক শহর মিলানের একটি হলে ‘ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান : আমাদের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি একথা বলেন। ইতালির উত্তর অঞ্চল তথা মিলান অঞ্চলের প্রবাসী বাংলাদেশিরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন মিলানের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং কমিউনিটি নেতা হোসাইন মোহাম্মদ মনির। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম ব্যক্তিত্ব, লেখক এবং এক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য। সেমিনারটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন ইতালির উত্তর অঞ্চলের রাজনীতিবিদ ও বাংলাদেশি কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আবদুল্লাহ আল মামুন, আজমত উল্লাহ শিকদার রবিন এবং নূর হোসেন জমির।
সভাপতির বক্তব্যে হোসাইন মোহাম্মদ মনির বলেন, বিগত সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নানা বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। নতুন বাংলাদেশে আমাদের আশা থাকবে গণঅভ্যুথানের সময় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাহসী ভূমিকা মূল্যায়ন করে যেন অতি দ্রুত প্রবাসী বান্ধব কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, ইতিহাসে যেই মীর জাফর লড়াই করে বর্গীর আগমন ঠেকিয়েছিল এবং আমাদের বাঁচিয়েছিল সেই মীর জাফর আমাদের স্বাধীনতা পলাশীর আম্রকাননে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিয়েছিল। একই ভাবে যেই শেখ মুজিব আমাদেরকে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, আমাদেরকে লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল সেই শেখ মুজিবের দল বাংলাদেশের ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের দাসত্ব সৃষ্টি করেছিল।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক জাতির কিছু বড় দূর্বলতা আছে। যেমন ফরাসিদের কাছে প্রেম, ইতালীয়দের কাছে ফুটবল ও ফ্যাশন। তেমনি আমাদের হচ্ছে কান্না ও বেদনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদা রক্ষায় আমরা সম্মিলিতভাবে প্রিয় মাতৃভূমিকে আর কাঁদতে দেব না এবং এর অতীত বঞ্চনার ইতিহাস মুছে দিব। তারপরও আমাদের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা নিয়ে ঝুঁকি তৈরী হলে আমরা সারা দুনিয়া জ্বালিয়ে দেব।
সেমিনারে প্রবাসীদের চার দফা দাবি নিয়ে সাংবাদিক মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ এবং অ্যাক্টিভিস্ট মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর লেখা একটি প্রবন্ধ পাঠ করা হয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রোম থেকে আগত রাজনীতিবিদ এবং কমিউনিটি নেতা আমিনুল ইসলাম সালাম, রাজনীতিবিদ সর্দার আসাদুজ্জামান রিপন, ইতালির বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ব্রাদার্স অব ইটালির ফরেন এফায়ার্স সম্পাদক কারলো ব্রিজনোলো গোরলা, একই দলের মিলান শহরের সমন্বয়ক সিমোনে অরলান্ডি, মিলান শহরের সিটি কাউন্সিলর ফ্রান্সেসকো রোকা।
এছাড়াও স্থানীয় ইতালীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরাও সেমিনারে জুলাই গণঅভ্যুথান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রদান করেন।
সেমিনারে ইতালির বিভিন্ন প্রদেশ ও শহর থেকে রাজনীতিবিদ, কমিউনিটি নেতা এবং বিশিষ্টজনেরা যোগ দেন। তাদের মধ্যে অন্যতম জাকির হোসেন, জুয়েল পাশা, শরিফুল ইসলাম মিলন। আরও উপস্থিত ছিলেন, ইতালির বিসেন্সা শহর থেকে ছিলেন রাজনীতিবিদ আজিজুর রহমান, মোফালকন শহর থেকে ছিলেন মোস্তাক আহমেদ, তুরিন শহর থেকে আরিফুর রহমান, পিসা শহর থেকে মোহাম্মদ জিন্নাহ, জেনোভা শহর থেকে উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ সবুজ ঢালী প্রমুখ।