মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা অস্বীকারকারীদের সামরিক ইতিহাস জ্ঞান নেই
মুক্তিযুদ্ধকে ‘ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ’ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা অস্বীকারকারীদের সামরিক ইতিহাস ও সামরিক বিজ্ঞানের বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ শীর্ষ নেতাদের বার্তায় বাংলাদেশের নাম না থাকার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় সামরিক ইতিহাসবিদ ও বিশেষজ্ঞদের লেখাতেও স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, মুক্তিযোদ্ধাদের সক্রিয় প্রতিরোধ পাকিস্তানি বাহিনীর সক্ষমতাকে বড় ধরনের দুর্বল করে দিয়েছিল। তাদের মতে, মুক্তিযোদ্ধাদের সেই ভূমিকা না থাকলে ভারতের পক্ষে ১৯৭১ সালের বিজয় অর্জনে আরও দীর্ঘ সময় লাগতো এবং প্রাণহানিও হতো অনেক বেশি। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা প্রথম থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। বিশেষ করে জুনের পর থেকে তারা পুরোপুরি সংগঠিত যুদ্ধ শুরু করে। পাকিস্তানি বাহিনীকে যেভাবে তারা নাস্তানাবুদ করেছিল, তা ভারতের সামরিক অভিযানের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। আরও পড়ুন বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে কলকাতায়
মুক্তিযুদ্ধকে ‘ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ’ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা অস্বীকারকারীদের সামরিক ইতিহাস ও সামরিক বিজ্ঞানের বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ শীর্ষ নেতাদের বার্তায় বাংলাদেশের নাম না থাকার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় সামরিক ইতিহাসবিদ ও বিশেষজ্ঞদের লেখাতেও স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, মুক্তিযোদ্ধাদের সক্রিয় প্রতিরোধ পাকিস্তানি বাহিনীর সক্ষমতাকে বড় ধরনের দুর্বল করে দিয়েছিল। তাদের মতে, মুক্তিযোদ্ধাদের সেই ভূমিকা না থাকলে ভারতের পক্ষে ১৯৭১ সালের বিজয় অর্জনে আরও দীর্ঘ সময় লাগতো এবং প্রাণহানিও হতো অনেক বেশি।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা প্রথম থেকেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। বিশেষ করে জুনের পর থেকে তারা পুরোপুরি সংগঠিত যুদ্ধ শুরু করে। পাকিস্তানি বাহিনীকে যেভাবে তারা নাস্তানাবুদ করেছিল, তা ভারতের সামরিক অভিযানের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
আরও পড়ুন
- বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে কলকাতায় ৫৪তম বিজয় দিবস উদযাপিত
বিজয় দিবসে মোদীর পোস্ট, নেই বাংলাদেশের নাম
তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অস্বীকার করেন, তারা মিলিটারি হিস্ট্রি বা মিলিটারি সায়েন্স সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তারা অস্বীকার করার চেষ্টা করতে পারেন, কিন্তু ইতিহাসের সত্য বদলানো যায় না। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা ছাড়া এই বিজয় সম্ভব ছিল না।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী আলাদা আলাদা বার্তায় ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান। তবে তাদের কোনো বার্তাতেই বাংলাদেশের নাম বা মুক্তিবাহিনীর ভূমিকার উল্লেখ ছিল না।
নরেন্দ্র মোদী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে বিজয় দিবসকে ভারতের ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে অংশ নেওয়া ভারতীয় সেনাদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন।
একই দিনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও এক্স-এ দেওয়া হিন্দি ভাষার পোস্টে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের শ্রদ্ধা জানান। তার বক্তব্যেও যুদ্ধটি কোথায় ও কার সঙ্গে হয়েছিল, সে প্রসঙ্গ অনুপস্থিত ছিল।
মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাদের যৌথভাবে যুদ্ধ করার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট শীর্ষ দুই নেতার বক্তব্যে না থাকায় বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটি নতুন কিছু নয়। আমি নিজে ভারতে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। তারা অনেক সময়ই মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ভূমিকা ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করে। কলকাতায় এই দিনটি অনেক ক্ষেত্রে ইস্টার্ন কমান্ড দিবস হিসেবে পালন করা হয়। তারা মনে করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শুধু তাদের সেনাবাহিনীই বিজয় অর্জন করেছে। সত্য হলো, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তারা জয়ী হয়েছিল, কিন্তু সেটি সম্ভব হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায়।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিবছরের মতো এবারও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের পক্ষ থেকে বিজয় দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা পাওয়ার কথা জানান তৌহিদ হোসেন।
জেপিআই/এএমএ
What's Your Reaction?