ইসরায়েলের অব্যাহত ও তীব্র হামলার কারণে গাজা শহর থেকে অন্তত ৩ লাখ মানুষ সরে গেছে। ইসরায়েলের আর্মি রেডিও রোববার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, উত্তর গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৮ জন নিহত ও ৩৪৬ জন আহত হয়েছে। হামলায় গাজার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক বহুতল ভবন ধ্বংস হয়, যেখানে বাস্তুচ্যুতরা আশ্রয় নিয়েছিল। ইসরায়েল দাবি করছে, এগুলো হামাস গোয়েন্দা তৎপরতায় ব্যবহৃত হচ্ছিল।
ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা করছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে হামাসকে ভেঙে দেওয়া ও আটক প্রায় ৫০ জন জিম্মিকে মুক্ত করা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও রবিবার জেরুজালেমে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। রুবিও বলেছেন, কাতারে ইসরায়েলি হামলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প খুশি নন, তবে এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ক বদলাবে না। যুদ্ধবিরতির ওপর কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে দুই দেশের আলোচনা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, অক্টোবর ২০২৩ থেকে ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বহু এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, ছড়িয়ে পড়েছে দুর্ভিক্ষ।
রোববারও পশ্চিম গাজার বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আবাসিক টাওয়ার, স্কুল ও বাস্তুচ্যুতদের শিবিরগুলোতে হামলা চালানো হয়েছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ মানুষকে জোর করে বাস্তুচ্যুত করছে।
এদিকে, হামাস দোহায় তাদের আলোচক দলের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের সঙ্গে বন্দি বিনিময় আলোচনা স্থগিত করেছে। সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, গাজার টাওয়ারে হামলা চলতে থাকলে বন্দি ইসরায়েলিদের জীবন হুমকিতে পড়তে পারে।
অন্যদিকে, কাতার জানিয়েছে, তাদের রাজধানীতে সাম্প্রতিক হামলা মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় প্রভাব ফেলবে না। কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণ বৈধ অধিকার না পাওয়া পর্যন্ত অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি আসবে না।
এদিকে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে গ্রিস থেকে পালতোলা জাহাজ অক্সিগোনো রওনা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক কনভয়ের এই উদ্যোগের লক্ষ্য গাজার অবরোধ ভেঙে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এবং চলমান যুদ্ধ বন্ধের দাবিকে জোরালো করা।