নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব চলছে। মেলার আজ পঞ্চম দিন চললেও দর্শনার্থী-ক্রেতাদের চাপ নেই। তবে মেলা প্রাঙ্গণের পেছনের অংশে রয়েছে বিভিন্ন বয়সী তরুণ-তরুণীদের আনাগোনা।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প মেলায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থী না থাকায় ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন। তবে মেলা প্রাঙ্গণের পেছনের অংশে তরুণ-তরুণীরা পছন্দের মানুষের সঙ্গে হাতে হাত রেখে, বেঞ্চে বসে নিজেদের মুহূর্ত উপভোগ করছেন। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরও ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
মেলায় শখের হাঁড়ির দোকানি সুশান্ত কুমার পাল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এখানে মেলায় দোকান বসিয়ে আসছি। তবে সবসময়ই মেলার শুরুর দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের চাপ কম থাকে। আশা করছি, ছুটির দিনে এবং শেষ সময়ে বেচাবিক্রি ভালো হবে।’
জামদানি হাউজের কর্ণধার শাহ আলম বলেন, ‘একসময় জামদানি শাড়ির অনেক চাহিদা থাকলেও এখন বিদেশি শাড়ির ভিড়ে এর চাহিদা কমে গেছে। তবে জামদানি শাড়ির ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা নিয়মিত মেলায় বসছি। প্রতিবারের মতো এবারও ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাবো আশা করছি।’
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক একেএম আজাদ সরকার বলেন, দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবিত করতে মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন। মেলায় কারুশিল্প প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ, নাগরদোলা, গ্রামীণ খেলাসহ বাহারি পণ্যসামগ্রীর প্রদর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলা, কর্মরত কারুশিল্পীদের কারুপণ্যের প্রদর্শনীসহ নানা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। আশা করছি, এবার মেলায় জনসমাগম বেশি হবে।
এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্প প্রদর্শনীর ৩২টি স্টলসহ ১০০টি স্টল বরাদ্দ করা হয়েছে। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৬৪ জন কারুশিল্পী সক্রিয়ভাবে অংশ নেবেন। সোনারগাঁয়ের কারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি-ঘোড়া, মমি পুতুল, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁয়ের বাহারি জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, ঢাকার কাগজের শিল্প, রাজশাহীর মৃৎশিল্প, শখের হাঁড়ি, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনি কাঁথা, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, মাগুরা ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলঙ্কার শিল্প, নাগরদোলা, বায়োস্কোপ ও মিঠাই-মণ্ডার পসরা থাকবে স্টলগুলোতে। ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
মো. আকাশ/এসআর/জিকেএস