মেসিকে নিয়ে সতীর্থদের আবেগঘন স্বীকারোক্তি
আর্জেন্টিনার মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে রাতটা হয়ে থাকল ফুটবল ইতিহাসের অংশ। ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে শেষবারের মতো নিজ দেশের মাটিতে বাছাইপর্বের ম্যাচ খেললেন লিওনেল মেসি। জোড়া গোল করে আবারও তারকার মতো আলোকিত করলেন রাতকে। তবে গোল কিংবা জয়ের চেয়েও বড় বিষয় ছিল বিদায়ের আবহ—আলবিসেলেস্তে সতীর্থরা যেন একসাথে মুগ্ধতার সাগরে ভেসে গেলেন মেসিকে ঘিরে।
লাউতারো মার্টিনেজ ম্যাচ শেষে আবেগঘন কণ্ঠে বললেন, ‘এটা স্মরণীয় এক রাত, কারণ লিও আমাদের জন্য কী, তা ভাষায় বলা যায় না। শুধু ফুটবলার নয়, প্রতিদিনের নেতৃত্ব, শিক্ষা আর মানুষ হিসেবে তিনি অসাধারণ।’
লাউতারো নিজেও গোল করেছিলেন, তবে জোর দিয়ে বললেন—এই রাত কেবল মেসির জন্যই ইতিহাসে জায়গা করে নেবে।
জুলিয়ান আলভারেজ, যিনি ম্যাচে মেসিকে এক দুর্দান্ত অ্যাসিস্ট দিয়েছিলেন, সরাসরি স্বীকার করলেন—‘আমাদের জন্য লিওর সঙ্গে খেলা এক বিশেষ সৌভাগ্য। আমি শট নিতে পারতাম, কিন্তু তাকে এগিয়ে আসতে দেখে বলটা ছেড়ে দিলাম। এটাই স্বাভাবিক।’
ম্যাচের পরপরই লিওনার্দো পারেদেস, আলভারেজসহ সতীর্থরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি শেয়ার করে মেসিকে শ্রদ্ধা জানালেন।
সবচেয়ে হৃদয়ছোঁয়া মন্তব্যটি আসে রদ্রিগো ডি পলের মুখে—‘তিনি ২০ বছর ধরে এখানে আসছেন, আর এখন শেষটা ঘনিয়ে আসছে। জীবন এমনই। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—তিনি সব দিয়েছেন, সব জিতেছেন, আর অসংখ্য মানুষকে সুখী করেছেন।’
এদিকে আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস মেসির জন্য এক আবেগঘন ভিডিও প্রকাশ করেছিল ম্যাচের আগে। সেই ভিডিও দেখে ডি মারিয়া পর্যন্ত চোখ ভিজিয়ে ফেলেন, মন্তব্যের জায়গায় রেখে যান কান্নার ইমোজি। আর ম্যাচ শেষে ডি পল নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে মেসিকে জড়িয়ে ধরা ছবিই শেয়ার করলেন।
২০ বছরের জাতীয় দলের পথচলার শেষ বাঁক ধীরে ধীরে কাছে আসছে। আর্জেন্টিনা জানে—যখনই মেসি বিদায় বলবেন, তখনো তারা গর্ব করে বলতে পারবে—
তিনি শুধু ট্রফি জেতেননি, পুরো জাতিকে ভালোবাসা, গর্ব আর অশ্রুর এক অনন্য উত্তরাধিকার দিয়ে গেছেন।