মেহেদিরাঙা হাতে স্বামীর ঘরে যাওয়া হলো না জাবি শিক্ষক জান্নাতুলের

15 hours ago 5

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চারুকলা বিভাগের শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস বিয়ে করেছিলেন সহপাঠীকে। কিন্তু এখনো স্বামীর ঘরে যাওয়া হয়নি তার। পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ৫ জানুয়ারি ধুমধাম করে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মেহেদিরাঙা হাতে সংসার জীবনে প্রবেশের কথা ছিল তার। তবে তা আর হলো না।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে অসুস্থ হয়ে মারা যান সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল (৩১)।

জান্নাতুল পাবনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রুমী খন্দকারের মেয়ে। এই একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা।

রুমী খন্দকারের সহকর্মী উৎপল মীর্জা বলেন, ‘রুমী ভাই একদম ভেঙে পড়েছেন। জান্নাতুল একমাত্র সন্তান তাদের।’

উৎপল জানান, ছয় মাস আগে জান্নাতুলের বিয়ে ঠিক হয় এবং আপাতত তা রেজিস্ট্রি করে রাখা হয়। আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি ধুমধাম করে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে স্বামীর হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি আর হলো না।

স্বজনেরা জানান, ছোট থেকেই জান্নাতুল ছিলেন অসম্ভব মেধাবী। শিক্ষাজীবনের সব ক্ষেত্রে তার ফলাফল ছিলো ঈর্ষণীয়। ২০০৯ সালে পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় এবং ২০১১ সালে পাবনা সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় এ প্লাস পান তিনি। এরপর ২০১২ সালে জাবির চারুকলায় ভর্তি হন। সেখানে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে ২০২১ সালে একই বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক রোখসানা খানম ডেইজি বলেন, ‘জান্নাতুল খুব চুপচাপ ও শান্ত স্বভাবের ছিলো। অত্যন্ত মেধাবী ছিলো। তার আকস্মিক মৃত্যুর খবরে আমরা শোকাহত।’

জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা কার্যক্রমে অংশ নিতে এসে শুক্রবার সকালে সিনেট ভবনে হঠাৎ পড়ে যান জান্নাতুল। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

শুক্রবার বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জান্নাতুলের জানাজা হয়। রাতে মরদেহ পাবনায় আনা হবে। পরে বাদ এশা শহরের কাচারিপাড়া মসজিদে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হবে।

শিক্ষক জান্নাতুলের মৃত্যুতে পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমানসহ স্থানীয় সাংবাদিকেরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

এএইচআইএন/একিউএফ/এএসএম

Read Entire Article