মোটরযানমুক্ত আধুনিক শহর, দেখেই চোখ জুড়ায় (ভিডিও)

3 hours ago 1

একবার ভাবুনতো এমন একটি শহর যেখানে নেই কোনো গাড়ির শব্দ, নেই যানজটের কালো ধোঁয়া। এর পরিবর্তে আছে শুধু পায়ে হাঁটার রাস্তা, যেখানে কান পাতলেই শোনা যায় সাইকেলের টুংটাং শব্দ আর পাওয়া যায় খোলা আকাশের তাজা বাতাস। সপ্নের মতো মনে হলেও এবার এমন এক উদ্যোগের দেখা মিলেছে। গ্রিসের থেসালোনিকি বা নেদারল্যান্ডের আমস্টারডামের অনুকরনেই এমনটা করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার কুল-ডি-স্যাকই হতে চলেছে প্রথম মোটরযানমুক্ত ও সাইকেলনির্ভর আধুনিক শহর। ভূমধ্যসাগরীয় ইউরোপের বিভিন্ন শহরের আদলে গড়া এই কমিউনিটির পরিবেশকে এমনভাবে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেখানে সবকিছুই পরিকল্পিত। এটিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোন পরিবেশবান্ধব মানুষের শহর, যেখানে থাকছে না কোনো গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা।

শহরটি সাজানো হচ্ছে পরিবেশবান্ধব রেস্তোরাঁ, দোকান, জিম আর সুইমিং পুল দিয়ে। হাঁটার দূরত্বেই মিলবে কোওয়ার্কিং স্পেস। শহরের কেন্দ্র, বিমানবন্দর বা দূরের কোন গন্তব্যে ট্রেন ধরে সহজেই পৌঁছানো যাবে। চাইলে সাইকেল বা ই-বাইক ভাড়া নিয়ে ঘুরে দেখা যাবে চারপাশের প্রাণ ও প্রকৃতি।

রাজ্যের অন্যতম উষ্ণতম শহর ফিনিক্সকে ঠান্ডা রাখার জন্য করা হয়েছে বিশেষ নকশা। শহরটির সাদা রঙের বিভিন্ন ভবনে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়, আর সরু পথ দিয়ে প্রবাহিত বাতাসে ছায়া মিলবে সবুজ গাছপালার নিচে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আশপাশের শহরগুলোর তুলনায় এখানে মাটির তাপমাত্রা ১৭ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম হয়ে থাকে। 

গাড়ি না থাকায় বাসিন্দাদের একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ বেড়েছে আরও। আগের চেয়ে সুদৃঢ় হয়েছে বন্ধুত্ব আর কমিউনিটির বন্ধন। স্থানীয়রা জানান, ধীরগতি, সহজ জীবনজাপন আর একে অন্যের সঙ্গে সংযোগ যেন নতুন করে বাচতে শিখিয়েছে তাদের।

শুধু জীবনধারাই নয়, পরিবেশ রক্ষায়ও এই উদ্যোগ অনন্য নজীর স্থাপন করেছে। গাড়ি কম ব্যবহারের ফলে প্রতি বছর এখানে ৩ হাজার টন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ রোধ করা সম্ভব হচ্ছে।

কুল-ডি-স্যাক এখন বিশ্বজুড়ে নগর পরিকল্পনাবিদদের অনুপ্রেরণা। হয়তো খুব শিগগিরই এমন গাড়িমুক্ত, সবুজ আর পরিবেশবান্ধব শহর আমাদের বাংলাদেশেও দেখা যাবে। তবে এজন্য প্রয়োজন সদিচ্ছা আর সমন্বিত উদ্যোগ।

 

Read Entire Article