ম্যাচ জিতেছে তাইপে, হৃদয় জিতেছেন মনিকা-শামসুন্নাহাররা

3 months ago 46

বাংলাদেশের চেয়ে ১০০ ধাপ এগিয়ে চাইনিজ তাইপে। সেই দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের মেয়েরা ফিফা প্রীতি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও হেরেছে। প্রথম ম্যাচে হার ছিল ৪-০, দ্বিতীয় ম্যাচ ১-০। অতিথি দলটি ২-০ তে সিরিজ জয়ের তৃপ্তি নিয়ে দেশে ফিরবে। বাংলাদেশ পেলো কি?

এ প্রশ্নের উত্তর বিস্তর। অক্টোবরের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সামনে রেখে সাবিনা-মনিকাদের শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলিয়ে পরীক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিল বাফুফে। সেই পরীক্ষার ফল বাংলাদেশের পক্ষে না গেলেও দুই ম্যাচে অর্জন হয়েছে বিশাল অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে দ্বিতীয় ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের নারী ফুটবলের অন্যতম সেরা ও গোছানো একটি ম্যাচ।

নতুন কোচ পিটার বাটলার জুয়া খেলেছিলেন একাদশ সাজাতে গিয়ে। বাংলাদেশের নারী ফুটবলের কিংবদন্তি সাবিনা খাতুনের নতুন অভিজ্ঞতা দিয়েছেন এই ইংলিশ কোচ। সাবিনাকে বাদ দিয়ে একাদশ সাজিয়েছিলেন দ্বিতীয় ম্যাচে। প্রথম ম্যাচের একাদশে বদলি চারটি। সবকিছু মিলিয়ে শুরুতে তিনি সবাইকে ভরকে দিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবর্তিত বাংলাদেশ কি ফুটবলটাই না খেললো।

জয়-পরাজয় দিয়ে অনেক সময় ম্যাচের মহত্বটা পরিমাপ করা যায় না। আর ম্যাচ যখন ফ্রেন্ডলি। নতুন কোচ চেয়েছিলেন সাফের আগে নতুন খেলোয়াড়দের পরখ করতে এবং সে পরখ তিনি করেছেন ১০০ ধাপ সামনে থাকা একটি দলের বিপক্ষে। বাজিতে শতভাগ সফল পিটার বাটলার।

১৭ মিনিটে গোল খেয়ে বসে বাংলাদেশ। বাকি ৭৩ মিনিটতো বাংলাদেশেরই। গোল শোধ করতে পারেনি লাল-সবুজ জার্সিধারী মেয়েরা। তাতে কি? এত বড় একটি দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ যেভাবে প্রাধান্য নিয়ে খেলেছে তাতে আগামীর জন্য আরো আশাবাদী হওয়ায় যায়।

অভিজ্ঞ সাবিনা খাতুন, মাশুরা পারভীন, সানজিদারা বাইরে ছিলেন। তা কখনো অনুভব্য ছিল না। আক্রমণভাবে তহুরা খাতুন, শামসুন্নাহার, রিতু পর্নারা দুর্দান্ত খেলেছেন। আর বাংলাদেশের সিংহভাগ আক্রমণের কারিগর ছিলেন মাঝমাঠের প্রাণভোমরা মনিকা চাকমা। এক কথায় এই ম্যাচটিকে মনিকা চাকমাময়ই বলা যায়। যেখানে বল, সেখানে মনিকা। ম্যাচ সেরার পুরস্কার থাকলে দ্বিতীয় কাউকে ভাবনায় আনতে হতো না বিাচরকদের।

বাংলাদেশ ম্যাচটি হারলেও দর্শকদের মন জিতে নিয়েছেন। বাংলাদেশের মেয়েদের কাছ থেকে এমন ফুটবলই দেখতে চেয়েছিলেন সবাই। নতুন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কিছু বুঝে ওঠার আগে প্রথম ম্যাচে হেরেছিল ৪-০ গোলে। যদিও ওই ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ দারুণভাবে ম্যাচে ঘুরেছিল। আর দ্বিতীয় ম্যাচে বুঝিয়ে দিয়েছেন ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন তারা।

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ছিল দুর্বার, অপ্ররিরোধ্য। গোল শোধ দেওয়া ছাড়া সবই করতে পেরেছে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা বাংলাদেশ। এ ম্যাচে দুটি বদলি করেছেন। ডিফেন্ডার আনাইয়কে উঠিয়ে নামিয়েছেন নিলুফার নিলাকে এবং ৭৮ মিনিটে তহুরাকে বসিয়ে নামিয়েছিলেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুনকে। লক্ষ্য ছিল গোল শোধ দেওয়া। বাংলাদেশ বারবার চাইনিজ তাইপের রক্ষণ চুরমার করেছে। শুধু গোল আদায় করতে পারেনি। প্রতিটি আক্রমণই চাইনিজ তাইপের মেয়েরা রুখে দিয়েছে ফিজিক্যাল অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগিয়ে।

গোলরক্ষক রুপনা চাকমা, রক্ষণে আফঈদা, নিলা, শিউলি আজিম, মাঝমাঠে মনিকার সাথে মুনকি ও স্বপ্না এবং উইংয়ে রিতু পর্না ও শামসুন্নাহার যেভাবে বল ফেলেছেন চাইনিজ তাইপের বক্সে তাতে অতিথি দলটিকে সময় কাটাতে হয়েছে বাংলাদেশের আক্রমণ সামলাতে। সাবিনা নেমে দুটি নিখুঁত কর্নার নিয়েছিলেন। বক্সে ক্রস দিয়েছিলেন। কিন্তু বারবারই চাইনিজ তাইপের রক্ষণ রুখে দিয়েছে বাংলাদেশের আক্রমণগুলো।

বাংলাদেশ দল

রুপনা চাকমা, শিউলি আজিম, আনাই মগিনি (নিলুফার নিলা) আফঈদা খন্দকার, শামসুন্নাহার, মনিকা চাকমা, তহুরা খাতুন (সাবিনা খাতুন), শামসুন্নাহার জুনিয়র, মুনকি আক্তার, স্বপ্না রাণী ,রিতু পর্না চাকমা।

আরআই/আইএইচএস

Read Entire Article