দুবাইতে রোববার অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যকার সবচেয়ে হাইভোল্টেজ ম্যাচটি। যেখানে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিযেছে ভারত। এই ম্যাচে টসের সময় এবং ম্যাচ শেষেও ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের একে অপরের সঙ্গে হান না মেলানোয় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মূলতঃ ভারতের ক্রিকেটাররাই পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে ‘হ্যান্ডশেক’ করতে অস্বীকৃতি জানান।
তবে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ক্রিকেটারদের হ্যান্ডশেক না করার বিষয়টি নতুন মোড় নিয়েছে। এই ম্যাচ ঘিরে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্ৰফটের আচরণ। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বর্তমান সভাপতি মাহসিন নাকভি দাবি তুলেছেন, পাইক্ৰফটকে অবিলম্বে এশিয়া কাপ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক।
অভিযোগ: টসের সময় হ্যান্ডশেক না করার নির্দেশ
পিসিবি অভিযোগ করেছে, রোববার দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে টসের সময় রেফারি অ্যান্ডি পাইক্ৰফট দুই দলের অধিনায়ককে আলাদা ডেকে বলেন, যেন তারা প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী হ্যান্ডশেক না করেন। পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আগা ও ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে নাকি এভাবে আলাদাভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়।
আইসিসিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ
সোমবার পিসিবি আইসিসিতে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছে। নাকভি এক টুইটে বলেন, ‘পিসিবি আইসিসিকে জানিয়েছে যে ম্যাচ রেফারি আইসিসির আচরণবিধি ও এমসিসি আইন ভঙ্গ করেছেন। আমরা তার অবিলম্বে অপসারণ দাবি করছি।’ পিসিবি এ নিয়ে একটি চিঠিও পাঠিয়েছে আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার ওয়াসিম খানের কাছে।
ভারতের অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের অভিযোগ, বিষয়টি এসেছে বিসিসিআই ও ভারত সরকারের আলোচনার ফলেই। ম্যাচ শেষে ভারতীয় খেলোয়াড়রা পাকিস্তান দলের সঙ্গে প্রচলিত নিয়মে শুভেচ্ছা বিনিময়ও করেননি। সূর্যকুমার যাদব ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়ে জানান, ভারত সরকার এবং বিসিসিআই আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সঙ্গে হ্যান্ডশেক না করার। তিনি বলেন, ‘কিছু বিষয় আছে যা খেলোয়াড়সুলভ মনোভাবের ঊর্ধ্বে।’
অন্যদিকে পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন এ ঘটনাকে ‘হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেন।
পরবর্তী পদক্ষেপ
অ্যান্ড পাইক্ৰফট এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে দু’টি ম্যাচে রেফারির দায়িত্ব পালন করেছেন। তাকে সরানো হলে আইসিসিকে নতুন রেফারি নিয়োগ দিতে হবে। যদিও টুর্নামেন্টের আয়োজক এসিসি, তবে ম্যাচ অফিসিয়ালদের নিয়োগ আইসিসি করে থাকে।
মূলতঃ এ ম্যাচটি ছিল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে গত এপ্রিলে কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটক হত্যার জের ধরে মে মাসের শুরুতে চারদিনের সীমান্ত সংঘর্ষ বা যুদ্ধ পরবর্তী প্রথমবার মুখোমুখি হওয়া। এর আগে ম্যাচ আয়োজন নিয়েও অনিশ্চয়তা ছিল। অবশেষে ভারত সরকার ঘোষণা দেয়, বহুজাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই, তবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হবে না তারা।
সব মিলিয়ে, দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান মহারণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন এক বিতর্ক, যা আগামী সুপার ফোরের লড়াইয়েও প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি আগামী ২১ সেপ্টেম্বর সুপার ফোরে দু’দেশ আবারও মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আইএইচএস/