‘ম্যাটস’ নিয়ে আন্দোলন: আমাদের অভিজ্ঞতা

বাংলাদেশে ডাক্তাররা এ মুহূর্তে আন্দোলনে নেমেছেন “ম্যাটস” নিয়ে। “ম্যাটস” (MATS) অর্থ ‘Medical Assistant training School’।

আমেরিকার প্রেক্ষাপটে মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টের (এম এ) ভূমিকাটা বলতে চাই।

এম এ ডাক্তারদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন এখানে। রোগী ডাক্তারের চেম্বারে আসবার পর তাদের ইতিহাস সংগ্রহ, ভাইটালস ( রক্তচাপ বা পালস) দেখা, তাদের সমস্যাগুলো লিপিবদ্ধ করা, তাদের এ্যাপয়েন্টমেন্ট বা রেফারেলের ব্যাপারে সাহায্য করা, রক্ত সংগ্রহ করা, ইন্সুরেন্স নিয়ে কাজ করা, ফার্মাসিতে ওষুধের জন্য কল করা নানাবিধ কাজ তারা করে। এম এর সাহায্য ডাক্তারদের অফিসে আবশ্যিক।

মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট হতে হলে হাই স্কুল বা সম পর্যায়ের পডাশুনা করতে হয়। ছয় থেকে বারো মাসের কোর্স করতে হয়। তারপর সার্টিফিকেট কোর্স পাস করতে হয়। ওয়াশিংটন ছাডা অন্য কোনো ষ্টেটে তাদের লাইসেন্স লাগে না। তবে আমেরিকান এসোশিয়েশন অফ মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টের সার্টিফিকেট তাদের থাকতে হবে।

মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট (এম এ) কোন ডাক্তারের সরাসরি তত্ত্বাবধান ছাডা কাজ করতে পারেন না। তারা রোগীর চিকিৎসা সেবার ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেন না। তারা নিজ থেকে একাকি কোনো রোগী দেখতে পারেন না বা প্রেসক্রিপশন দেন না।

মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট ডাক্তারদের মতো সাদা কোট পডেন না। তাদের বেতন ডাক্তারদের বেতনের প্রায় চার বা পাঁচগুন কম হয়।

মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টরা সাধারণত দীর্ঘদিন এ কাজ করেন না। এটি তাদের ভবিষ্যতের ফুটস্টেপ বা পথ। তার ভবিষ্যতে নার্স বা নার্স প্রাকটিশনার হন বা স্বাস্থ্য প্রসাশনের নানা কাজ করেন।

মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টের ভূমিকা অপরিসীম তবে সীমাবদ্ধ। এটি কঠোর ভাবে পালিত হয়।

ছবিতে আমাদের মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টের সাথে বাংলাদেশ থেকে আসা তরুণ চিকিৎসকদের ছবি

চিকিৎসা সেবার পিডামিডের শীর্ষে থাকেন ডাক্তার। সবাই সেখানে পৌঁছাতে চান। আর তাই কঠোর নিয়ম এবং আইন রয়েছে তা শক্তভাবে রক্ষা করার জন্য।

আমি যখন বাংলাদেশে মেডিকেল কলেজে পডেছি, তখন মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট বলে কিছু শুনিনি।

বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ডাক্তাররাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এটি তাদের আবশ্যিক কিনা। যদি আবশ্যিক হয়, তবে এটার একটা আদর্শ নীতিমালা করতে হবে। মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টের কাজের ভূমিকা ও সীমাবদ্ধতা কঠিনভাবে পালন করতে হবে।তাদের কোর্স কারিকুলাম তারা ঠিক করবেন।নতুবা ডাক্তাররা নিজেদের বিপদ ডেকে নিয়ে আসবেন। রোগীরা নিরাপদ থাকবেন না।

আবার একই সাথে মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্টের আবশ্যিকতা চিন্তা করে তাদের যথাযথ কাজে লাগালে চিকিৎসা সেবার উন্নতি হবে, রোগীদের সন্তুষ্টি বাড়বে সেটাও ভাবতে হবে।

লেখক: আমেরিকার অরলান্ডো প্রবাসী চিকিৎসক।

এইচআর/জেআইএম