ময়মনসিংহে সরকারি খামারে মিলল অস্ত্র ও মাদক

3 hours ago 5

ময়মনসিংহের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বিদেশি পিস্তলসহ বিপুল অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করেছে পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে নগরীর মাসকান্দা এলাকার মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের নৈশ্যপ্রহরীর কক্ষে চলছিল অস্ত্র ও মাদক কেনাবেচা। 

এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের নৈশ প্রহরীর স্ত্রী ফারজানা শান্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার (২৩ ডিসেম্বর) রাত দেড়টায় নগরীর মাসকান্দা এলাকায় মৎস্য বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের পাশে স্টাফদের থাকার রুম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ সময় মো. হৃদয় মিয়া (২৪) ও মো. তন্ময়সহ (২৫) অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুজন পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে পৃথক দুইটি মামলা রুজু করা হয়েছে।

ফারজানা ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার নীগুয়ারী এলাকার মো. স্বপন খানের মেয়ে। ফারজানার স্বামী হৃদয় মিয়া ময়মনসিংহের পাগলা থানাধীন নীগুয়ারী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি চাকরির সুবাদে তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন সরকারি এই খামারে।

পুলিশ ওই রুম থেকে একটি নাইন এমএম বিদেশি পিস্তল, একটি কাঠের বাটযুক্ত পুরোনো বিদেশি পিস্তল, একটি পুরোনো ম্যাগাজিন, একটি এয়ারগান, ১৩০ পিস সিসা গুলি, একটি টেলিস্কোপ, একটি সামুরাই, একটি সুইচগিয়ার চাকু, দুটি চাইনিজ কুড়াল, তিনটি দেশীয় চাইনিজ কুড়াল, দুটি চাপাতি, ১০টি রামদা, ৬টি চাকু, একটি বড় ছুরি, একটি ডেগার, ৬০ বোতল বিদেশি মদ, ৫ বোতল ফেনসিডিল ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। 

পুলিশ জানায়, রোববার মধ্যরাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অস্ত্র ও মাদক কেনাবেচার তথ্য পেয়ে তাৎক্ষণিক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের নগরীর মাসকান্দা ফিশারি এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের চেকপোস্ট দেখে তিনজন মোটরসাইকেল আরোহী মোটরসাইকেল রেখে দৌড়ে পালায়। এ সময় তারা দেয়াল টপকে মৎস্য বীজ উৎপাদন কেন্দ্রে ঢুকে পড়ে। 

সেখানে স্টাফদের থাকার রুম থেকে চারজনকে পালাতে দেখা যায়। তখন ওই রুমের অস্থায়ী গার্ড হৃদয়ের স্ত্রী ফারজানা শান্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে স্বীকার করে তার স্বামী হৃদয় ও তন্ময়সহ আরও কয়েকজন মিলে স্টাফদের রুমে ঢুকেছিল। পরে ফারজানা শান্তাকে নিয়ে স্টাফদের থাকার রুম এবং তার নিজের রুমে তল্লাশি চালানো হয়।

সেখান থেকে দুইটি বিদেশি পিস্তল, বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়। তারা মৎস্য খামারে চাকরির পাশাপাশি অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয়সহ নেশাজাতীয় মাদক দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারজানা শান্তা স্বীকার করেন।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬ (১) এর ২৪ (খ)/১৪(খ)/৩৮/৪১ ধারায় অপরাধ করায় আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকের পৃথক দুইটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা দুইটি তদন্তাধীন। নৈশ্যপ্রহরী হৃদয় মিয়াকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া চক্রটির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে। 

এগুলোর বিষয়ে কিছুই জানা নেই উল্লেখ করে সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারটির ব্যবস্থাপক হাছেন আলী বলেন, এখানে অস্ত্র ও মাদক কেনাবেচা হলেও আমি কখনোই কিছু টের পাইনি। এই চক্রের সঙ্গে জড়িতের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। 

সোমবার দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানায় কনফারেন্স রুমে রেঞ্জ ডিআইজি আশরাফুর রহমান প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম, কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান, ওসি তদন্ত সাইফুল ইসলামসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Read Entire Article