ময়মনসিংহে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে মাছ-সবজির দাম

1 week ago 4

ময়মনসিংহে বেড়েছে মাছ ও সবজির দাম। বাজারে সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়ায় ক্ষুব্ধ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে শহরের ঐতিহ্যবাহী মেছুয়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে সবধরনের সবজি ও মাছের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তবুও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে ক্রেতারা এক বিক্রেতা থেকে আরেক বিক্রেতার কাছে ছুটছেন। তবে দাম কমাতে নারাজ বিক্রেতারা। সিন্ডিকেট করার কারণে ন্যায্য দামে বিক্রি হচ্ছে না।

বাজার ঘুরে জানা যায়, গত সপ্তাহে চিচিঙ্গা ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। অথচ এখন কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পটোল, টমেটো, চায়না গাজর, দেশি গাজর, ঝিঙে ও কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। বর্তমানে পটোল ৫০ টাকা, চায়না গাজর ১৩০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা ও টমেটো ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ঢেঁড়স ৮০ টাকা, সিম ১৬০ টাকা, ঝিঙে ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, চিকন বেগুন ১০০ টাকা ও শসা ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। লতা ৪০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, কচুর মুখি ২০ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ ৬০ টাকা পিস, কাঁচা কলা ৪০ টাকা হালি ও লেবু ১৫ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

ময়মনসিংহে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে মাছ-সবজির দাম

একই বাজারে মাছের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে কালবাউশ ৩২০-৩৮০ টাকা, কাতলা ৩৪০-৪০০ টাকা, পাঙাশ ২০০-২৩০ টাকা, শিং ৩২০-৬১০ টাকা, কৈ ২৩০-৩২০ টাকা, রুই ৩০০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২৮০ টাকা, পাবদা ৩৬০-৪৮০ টাকা, শোল ৫৮০-৮৬০ টাকা, ট্যাংরা ৫২০-৮৪০ টাকা, সিলভার কার্প ২২০-২৭০ টাকা, মৃগেল ২৬০-৩১০ টাকা ও টাকি ৪০০-৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

স্থিতিশীল অবস্থায় ব্রয়লার মুরগি। এর দাম ১৬০ টাকা, কক মুরগি ৩০০ টাকা, গরুর মাংস ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১৫০ টাকা, ফার্মের মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালিতে, দেশি মুরগির ডিম ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

সবজি কেনার সময় কথা হয় নাজমা খাতুন নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। তবুও দাম বাড়িয়ে বিক্রেতারা তাদের পকেট ভারি করছে। বাজার মনিটরিং দুর্বল থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

মাছ কেনার সময় কথা হয় জহির উদ্দিন নামের আরেকজন ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে কার্যকরী কোনো মরিটরিং ব্যবস্থা নেই। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা খেয়ালখুশি মতো দাম রাখছেন। কিছুটা কম দামে পেতে এক বিক্রেতা থেকে আরেক বিক্রেতার কাছে গিয়েছি। কিন্তু দাম কমানো হচ্ছে না।

ময়মনসিংহে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে মাছ-সবজির দাম

সবজি বিক্রেতা নয়ন মিয়া বলেন, আড়তদাররা কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন। ফলে খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়ছে।

খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো যুক্তিসংগত কিনা? এমন প্রশ্নে এই বিক্রেতা বলেন, সব খুচরা বিক্রেতা যে দামে বিক্রি করছে, আমিও একই দামে বিক্রি করছি।

সবজির আড়তদার আব্দুল জলিল বলেন, আবহাওয়ার তারতম্য ও সরবরাহ কম থাকায় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা ২০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছে। এতে আমাদের কোনো দোষ নেই।

সরবরাহ কমের অজুহাত দেখিয়ে মাছ বিক্রেতা আব্দুল হেকিম বলেন, অন্যান্য সময়ের তুলনায় কিছুদিন ধরে মাছের সরবরাহ কমেছে। ফলে আড়তে দাম বাড়ায় খুচরা পর্যায়েও দাম বেড়ে গেছে।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘পাইকারি যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তার চেয়ে কিছুটা লাভ করে ন্যায্য দামে খুচরা বিক্রেতাদের বিক্রি করতে হবে। কিন্তু ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করে ক্রেতাদের ঠকানো অপরাধ। বাজারে অভিযান চালিয়ে অহেতুক দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের ঠকানোর প্রমাণ মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কামরুজ্জামান মিন্টু/আরএইচ/জেআইএম

Read Entire Article