যশোরে ঘুরতে গেলে যা যা দেখবেন
সুরাইয়া ইয়াসমিন সুমিঘুরতে কার না ভালো লাগে। যখন ইচ্ছা করে, ঘুরলে মন ভালো থাকে। তাই হঠাৎ পরিকল্পনা করি। তবে ঠিক কোথায় যাবো, বুঝে উঠতে পারছিলাম না! ভাবলাম, খুলনার পাশেই যশোর। সেখানে যাওয়া যাক। যেই ভাবা; সেই কাজ। আগের রাতে টিকিট কাটা হলো। টিকিট না কাটলে সিট পাওয়া যায় না। যেহেতু অনেক দূরে যেতে হবে। তাই দাঁড়িয়ে যাওয়া খুবই কষ্টকর। ফলে কেটে ফেললাম টিকিট। জনপ্রতি সত্তর টাকা ভাড়া। সকাল সোয়া ৭টার ট্রেন। বাসা থেকে সাড়ে ৬টায় রওয়ানা দিলাম। স্টেশন বাসা থেকে একটু দূরে। যথারীতি সাতটা পাঁচে স্টেশনে পৌঁছলাম। ট্রেন চলে এলো, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস। এটি যশোরের। তার আগে নোয়াপাড়া ও বেনাপোল যাওয়া যায়। দেড়ঘণ্টার মতো লেগেছিল যশোর স্টেশনে পৌঁছতে। যশোর স্টেশনে নেমে একটু সামনে গিয়ে ইজিবাইকে উঠলাম। জনপ্রতি ২০ টাকা করে মনিহার পর্যন্ত। মনিহার বিখ্যাত সিনেমা হল। অনেক পরিচিত। রাস্তা পার হয়ে গেলাম সকালে নাস্তা করতে। পরোটা আর ডাল ভাজি খেলাম। দাম ১০ টাকা করে। পরোটাগুলোর স্বাদ ছিল অসাধারণ। বেশি তেল না আবার অনেক সুন্দর। সেখান থেকে ইজিবাইকে নিউমার্কেট। জনপ্রতি ১০ টাকা। শুনে আশ্চর্য হলাম, যশোরের একটি জায়গার নাম
সুরাইয়া ইয়াসমিন সুমি
ঘুরতে কার না ভালো লাগে। যখন ইচ্ছা করে, ঘুরলে মন ভালো থাকে। তাই হঠাৎ পরিকল্পনা করি। তবে ঠিক কোথায় যাবো, বুঝে উঠতে পারছিলাম না! ভাবলাম, খুলনার পাশেই যশোর। সেখানে যাওয়া যাক। যেই ভাবা; সেই কাজ। আগের রাতে টিকিট কাটা হলো। টিকিট না কাটলে সিট পাওয়া যায় না।
যেহেতু অনেক দূরে যেতে হবে। তাই দাঁড়িয়ে যাওয়া খুবই কষ্টকর। ফলে কেটে ফেললাম টিকিট। জনপ্রতি সত্তর টাকা ভাড়া। সকাল সোয়া ৭টার ট্রেন। বাসা থেকে সাড়ে ৬টায় রওয়ানা দিলাম। স্টেশন বাসা থেকে একটু দূরে। যথারীতি সাতটা পাঁচে স্টেশনে পৌঁছলাম। ট্রেন চলে এলো, সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস। এটি যশোরের। তার আগে নোয়াপাড়া ও বেনাপোল যাওয়া যায়। দেড়ঘণ্টার মতো লেগেছিল যশোর স্টেশনে পৌঁছতে।
যশোর স্টেশনে নেমে একটু সামনে গিয়ে ইজিবাইকে উঠলাম। জনপ্রতি ২০ টাকা করে মনিহার পর্যন্ত। মনিহার বিখ্যাত সিনেমা হল। অনেক পরিচিত। রাস্তা পার হয়ে গেলাম সকালে নাস্তা করতে। পরোটা আর ডাল ভাজি খেলাম। দাম ১০ টাকা করে। পরোটাগুলোর স্বাদ ছিল অসাধারণ। বেশি তেল না আবার অনেক সুন্দর।
সেখান থেকে ইজিবাইকে নিউমার্কেট। জনপ্রতি ১০ টাকা। শুনে আশ্চর্য হলাম, যশোরের একটি জায়গার নাম। নিউমার্কেট শুনে ভেবে নিয়েছিলাম এখানে মার্কেট থাকবে কিন্তু মার্কেট নেই। ২০ টাকায় চলে গেলাম জেস গার্ডেন। যার ভিডিও আগেই দেখেছিলাম। আমরা প্রায় সাড়ে নয়টার দিকে গেলাম। তখনো গার্ডেন খোলেনি। মাথাও ব্যথা করছিল অনেক। আশেপাশে কোনো ওষুধের দোকান ছিল না। একটি দোকান থেকে চা পান করলাম। খাওয়ার পর অনেকটাই ভালো লাগছিল।
দশটায় জেস গার্ডেন খুলে দিলো। জনপ্রতি ৬০ টাকা। ভেতরে প্রবেশ করতে চোখে পড়লো একটি ফোয়ারা। সামনে যতই আগাচ্ছিলাম; ততই ভালো লাগছিল। স্নিগ্ধ, নীরব পরিবেশ। গাছপালায় ঘেরা সবুজ পরিবেশ। মনটা শীতল হয়ে গিয়েছিল। অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। এদিনই ঘটলো বাংলাদেশে সবচেয়ে ভয়ংকর ঘটনা। আগে কখনো বাংলাদেশে এত বড় ভূমিকম্প দেখিনি। বুঝে ওঠার আগেই যেন ঘটে গেল।
সাড়ে ১১টায় যাই ওয়াটার পার্কে। সামনে ঝুলন্ত একটি সেতু, সুন্দর লাগছিল। তার ওপর দিয়ে যেতে হয়। পাশে পানি অনেক সুন্দর। ওয়াটার পার্কে ঢোকার আগে ছিল দোলনা। সুন্দর বসার জায়গা। এই গার্ডেনে শিশুরা অনেক আনন্দ উপভোগ করতে পারে। বাচ্চাদের আকর্ষিত করতে হাতি, বাঘ, দোলনা, ট্রি হাউজ, স্লিপার রয়েছে। একটি সুন্দর জায়গা। ওয়াটার পার্কে ঢুকতে গেলে জনপ্রতি শুক্র- শনিবারে তিনশ টাকা করে ঢুকতে হয়। রোববার থেকে বৃহস্পতিবার জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে ঢুকতে হয়। দুটি শিফটে সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত আর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বুঝে উঠতে পারিনি, আমরা প্রায় বারোটা থেকে ১টা পর্যন্তই নিয়েছিলাম।
আরও পড়ুন
হেমন্তের কুয়াশায় ঘুরে দেখুন বর্ণিল ইবি
মসজিদের নান্দনিক নির্মাণশৈলী মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের
ভেতরে ঢুকতেই লকারের ব্যবস্থা আছে। নারী-পুরুষ আলাদা আলাদা লকার। ৫০ টাকা করে লকারের চাবি। প্রথমে ১০০ টাকা তাদের ওখানে জমা রাখতে হয়। মোট ১৫০ টাকা। তাছাড়া দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও আছে। স্বচ্ছ পানিতে অনেক সুন্দর ছিল সুইমিং পুলগুলো। পানি অনেক ঠান্ডা। যেহেতু শীতকাল আসছে; সেহেতু পানি ঠান্ডাই থাকবে। তাছাড়া যেখানে রোদ ছিল, সেই পুলটা কম ঠান্ডা। আমরা বের হয়ে গেলাম একটার দিকে।
হঠাৎ মাথা ব্যথা করছিল। তাই আড়াইটার দিকে বের হয়ে গেলাম। সেখান থেকে জনপ্রতি ১০ টাকা দিয়ে নিউমার্কেটে। সেখানে স্বপ্ন স্বাদ হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেলাম। গরুর কালা ভুন ১৫০ টাকা আর সাদাভাত নিলাম ২০ টাকা প্লেট। সালাদ আর ডালও দিয়েছিল। খাবারের মান ভালো। সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম একটি রিকশা নিয়ে, ভাড়া ৩০ টাকা। উদ্দেশ্য কালেক্টর ভবন।

যশোরের বিখ্যাত কালেক্টর ভবনে গেলাম। যাওয়ার পথে রাস্তায় হাসপাতাল, বিভিন্ন দোকানপাট চোখে পড়ল। যেহেতু শহর দিয়ে যাচ্ছিলাম। অবশেষে আনুমানিক তিনটার দিকে কালেক্টর ভবনে। চোখ যেন জুড়িয়ে গেল। অনেক জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে। এখানে অসংখ্য মানুষের ভিড়। একটি পুকুর রয়েছে। যেখানে অনেক রকমের মাছ। রঙিন মাছ দেখে শিশু বা বড়রা খাবার দেন। চটপটি, ফুচকা, আইসক্রিম, ঝালমুড়ি নিয়েও বসেছিলেন অনেকে। পুকুরপাড়ে বসে থাকতে খুবই ভালো লাগছিল।
আসার সময় টিকিট কেটে নিয়েছিলাম। বিকাল পাঁচটায় ট্রেন ছিল। অনেক সময় ছিল হাতে। তাই কিছুক্ষণ পুকুরপাড়ে বসেছিলাম। মাছ দেখছিলাম। যশোরের ফুচকার পরিবর্তে ভেলপুরি খেলাম। অতটা মজা ছিল না। কিন্তু ঝালমুড়ি অনেক মজা ছিল। বের হয়ে গেলাম সাড়ে চারটার দিকে। পাঁচটায় ট্রেন। দেরী না করে উঠে পড়লাম রিকশায়, ত্রিশ টাকা ভাড়া।
স্টেশনে এসে বসে থাকতে হলো। ৫টা ১৭ মিনিটে আমাদের ট্রেন এলো, রূপসা এক্সপ্রেস। উঠে পড়লাম ট্রেনে খুলনার উদ্দেশ্যে। সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে পৌঁছে গেলাম খুলনা স্টেশনে। দিনটি অনেক সুন্দর কেটেছিল। মাঝে মাঝে এমন হুটহাট করে ঘুরলে মন্দ হয় না। স্মৃতির পাতায় আরেকটি দিন যুক্ত হয়ে গেল।
লেখক: শিক্ষার্থী, অনার্স ৩য় বর্ষ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা।
এসইউ
What's Your Reaction?