যারা ‘প্রত্যয়’ স্কিম করলেন তারা কেন এর বাইরে থাকলেন

3 months ago 42

‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবিতে চলমান আন্দোলন নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় যে ব্যাখ্যা দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষকরা। বুধবার (৩ জুলাই) বেলা ১১টায় রাবির তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা যারা এই স্কিম তৈরি করলেন, তারা নিজেরা কেন সেই স্কিমের বাইরে থাকলেন? বিদ্যমান পেনশন স্কিমের অধীনে যারা একই সুবিধাদি পেতেন, নতুন স্কিমে তাদের একই স্কিমের অন্তর্ভুক্ত করা হলে সেটি নিয়ে বৈষম্যের কথা উঠতো না। যেখানে নতুন বেতন স্কেল সবার জন্য একসঙ্গে কার্যকর হচ্ছে, সেখানে আলাদা স্কিম রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই, এটি বৈষম্যমূলক। যেখানে স্বয়ং সরকার প্রধান বললেন, যারা বিদ্যমান পেনশন স্কিমের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নতুন স্কিম তাদের জন্য নয়, তবে কেন আবার প্রচলিত পেনশন স্কিম বাদ দিয়ে নতুন স্কিমের আওতায় নিয়ে আসার বাধ্যবাধকতা দেখা দিলো।

আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদ বলেন, সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছেন তা যৌক্তিক। সারা পৃথিবীর কল্যাণ রাষ্ট্রগুলোতে যেখানে নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়, সেখানে আমাদের দেশে এভাবে কমানোর উদ্যোগ বিস্ময়কর। আমাদের প্রতিবেশী দেশসমূহের তুলনায়ও যেখানে আমাদের দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা কম, সেখানে প্রত্যয় স্কিম হতাশাজনক। এতে করে জাতির মেধাবী সন্তানরা এ ধরনের পেশায় আসতে অনুৎসাহিত হবেন।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ঐক্যবদ্ধভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল এবং স্বতন্ত্র পে স্কেলের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, গতকাল ‘স্পষ্টকরণ’ নামে যে বক্তব্য সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে তা হাস্যকর ও শুভঙ্করের ফাঁকি। এটা আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের শিক্ষক সমিতির সভাপতি এটি প্রত্যাখ্যান করে বক্তব্য রেখেছেন।

যারা ‘প্রত্যয়’ স্কিম করলেন তারা কেন এর বাইরে থাকলেন

রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে আমরা তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই পারে আমাদের আন্দোলন চলমান রাখতে। তবে ৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী থাকায় আন্দোলন একদিনের জন্য বন্ধ থাকবে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যখন দেশে করোনা মহামারি ছিল তখনও ক্যাম্পাসে বন্ধ ছিল। ক্যাম্পাস খোলার পর শিক্ষকরা অতিরিক্ত ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে সেই ক্ষতি পুষিয়ে ছিলেন। এভাবেই আমাদের চলমান আন্দোলন শেষ হওয়ার পর আবারও শিক্ষকরা অতিরিক্ত ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দেবেন।

এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বক্তব্য রাখেন কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক সরকার, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌসসহ অনেকেই।

মনির হোসেন মাহিন/জেডএইচ/জিকেএস

Read Entire Article