যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিন কার্ড পাওয়ার আগ মুহূর্তে আটক হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় তিন দশক ধরে বসবাস করা ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীকে গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারের শেষ ধাপে গিয়ে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আটক ওই নারীর নাম বাবলেজিত ওরফে বাবলি কৌর (৬০)। তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, বাবলি কৌর তার মুলতুবি গ্রিন কার্ড আবেদনের অংশ হিসেবে বায়োমেট্রিক স্ক্যানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) দপ্তরে গিয়েছিলেন। গত ১ ডিসেম্বর সেখানে সাক্ষাৎকার চলাকালেই ফেডারেল এজেন্টরা তাকে আটক করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে জ্যোতি। জ্যোতি জানান, ওই দিন আইসিই অফিসের ফ্রন্ট ডেস্কে অবস্থান করছিলেন তার মা। এ সময় একাধিক ফেডারেল এজেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। পরে বাবলি কৌরকে একটি কক্ষে ডাকা হয়, যেখানে এজেন্টরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই তাকে জানানো হয় যে তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আটকের পর বাবলি কৌরকে তার আইনজীবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হলেও, তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত পরিবার জানতেই পারেনি তাকে কোথায় নেওয়া হয়েছে। পরে তারা জানতে পারেন, তাকে রাতারাতি অ্যাডেলান্টোতে স্থানান

যুক্তরাষ্ট্রে গ্রিন কার্ড পাওয়ার আগ মুহূর্তে আটক হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নারী

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় তিন দশক ধরে বসবাস করা ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীকে গ্রিন কার্ড সাক্ষাৎকারের শেষ ধাপে গিয়ে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আটক ওই নারীর নাম বাবলেজিত ওরফে বাবলি কৌর (৬০)। তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, বাবলি কৌর তার মুলতুবি গ্রিন কার্ড আবেদনের অংশ হিসেবে বায়োমেট্রিক স্ক্যানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) দপ্তরে গিয়েছিলেন। গত ১ ডিসেম্বর সেখানে সাক্ষাৎকার চলাকালেই ফেডারেল এজেন্টরা তাকে আটক করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে জ্যোতি।

জ্যোতি জানান, ওই দিন আইসিই অফিসের ফ্রন্ট ডেস্কে অবস্থান করছিলেন তার মা। এ সময় একাধিক ফেডারেল এজেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন। পরে বাবলি কৌরকে একটি কক্ষে ডাকা হয়, যেখানে এজেন্টরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই তাকে জানানো হয় যে তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।

আটকের পর বাবলি কৌরকে তার আইনজীবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হলেও, তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত পরিবার জানতেই পারেনি তাকে কোথায় নেওয়া হয়েছে। পরে তারা জানতে পারেন, তাকে রাতারাতি অ্যাডেলান্টোতে স্থানান্তর করা হয়েছে। এটি আগে একটি ফেডারেল কারাগার ছিল, বর্তমানে আইসিইর ডিটেনশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সেখানেই তিনি আটক রয়েছেন।

পরিবার জানায়, বাবলি কৌরের এক মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও তার মাধ্যমে তিনি গ্রিন কার্ডের আবেদন করেছিলেন, যা এরই মধ্যে অনুমোদিত। তার স্বামীও গ্রিন কার্ডধারী।

বাবলি কৌরের পরিবার ও জীবন

পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর প্রথমে তারা ল্যাগুনা বিচে বসবাস শুরু করেন। পরে কাজের প্রয়োজনে ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচ শহরের বেলমন্ট শোর এলাকায় চলে যান। বাবলি কৌর ও তার স্বামীর তিন সন্তান রয়েছে। ৩৪ বছর বয়সী মেয়ে জোটি ডিএসিএ (ডিফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস) কর্মসূচির আওতায় বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। তার বড় ছেলে ও মেয়ে দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বাবলি কৌর ও তার স্বামী বেলমন্ট শোরের সেকেন্ড স্ট্রিটে ‘নটরাজ কুইজিন অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড নেপাল’ নামে একটি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করেছেন, যা স্থানীয় কমিউনিটির একটি প্রিয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত ছিল। এছাড়া তিনি প্রায় ২৫ বছর বেলমন্ট শোরের রাইট এইড ফার্মেসিতে কাজ করেছেন। চলতি বছরের শুরুতে ওই ফার্মেসি চেইনের বাকি শাখাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে তিনি সেখানে কাজ শেষ করেন। সম্প্রতি তিনি আবারও ‘রয়্যাল ইন্ডিয়ান কারি হাউস’-এ রেস্তোরাঁর কাজে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

মুক্তির দাবিতে চাপ

বাবলি কৌরের মুক্তির দাবিতে এগিয়ে এসেছেন ডেমোক্রেটিক কংগ্রেসম্যান রবার্ট গার্সিয়া, যিনি লং বিচ এলাকার প্রতিনিধি। তার দপ্তর জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেডারেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। একই সঙ্গে পরিবার অতিরিক্ত আইনি আবেদন প্রস্তুত করছে, যার মাধ্যমে মামলার প্রক্রিয়া চলাকালে জামিনে বাবলি কৌরের মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।

পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য অনুযায়ী, অ্যাডেলান্টো ডিটেনশন সেন্টারে বাবলি কৌর একটি বড় ডরমিটরি-ধাঁচের কক্ষে আটক রয়েছেন, যেখানে আরও বহু বন্দি আছেন। কক্ষের আলো সারারাত জ্বালানো থাকে ও সার্বক্ষণিক শব্দের কারণে ঠিকমতো ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

সীমিত সময়ের মধ্যে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেলেও, একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতের জন্য অনেক সময় পুরো দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।

মেয়ে জোটি বলেন, এটা আমাদের জন্য এক ভয়াবহ দুঃস্বপ্ন। তাকে বের করে আনার জন্য আমরা সবকিছু করার চেষ্টা করছি। তিনি সেখানে থাকার যোগ্য নন। এটি অমানবিক।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএএইচ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow